প্রাক-প্রাথমিকের মধ্য দিয়ে মাধ্যমিক পর্যায়ে শ্রেণিকক্ষে সশরীরে পাঠদান পুরোপুরি শুরু হচ্ছে আজ। তবে প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে দুই দিন মঙ্গল ও রোববার ক্লাসে অংশ নেবে। এর মধ্য দিয়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণে বাধাগ্রস্ত হওয়া সশরীরে পাঠদান দীর্ঘ দুই বছর পর স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরছে। এতদিন মাধ্যমিক ও প্রাথমিকে সীমিত পরিসরে ক্লাস চলছিল।
সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব নজরুল ইসলামের সই করা অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
তাতে বলা হয়, করোনাভাইরাসজনিত রোগের বিস্তার কমে যাওয়ায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এ বিভাগের আওতাধীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শ্রেণিকক্ষে নিয়মিত পাঠদান ১৫ মার্চ থেকে অব্যাহত থাকবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় পুরোদমে ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।’
কোন রুটিনে ক্লাস হবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে যে রুটিনে ক্লাস হয় সে রুটিনেই ক্লাস হবে। তবে শিক্ষার্থীদের ঘাটতি পূরণে শিক্ষকদের অধিক যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানাই।’
২০২০ সালের ১৭ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর দুই দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়। প্রথম দফায় প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করে শিক্ষাঙ্গনের দুয়ার।
সশরীরে ক্লাস শুরু হয় মাধ্যমিক স্কুলে। এরপর কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে। সবার পর সশরীরে ক্লাস শুরু হয় প্রাথমিকে।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে দ্বিতীয় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস বন্ধ করে দেয়া হয় গত ২১ জানুয়ারি। এ দফায় শিক্ষাঙ্গনে সশরীরে ক্লাস বন্ধ থাকে এক মাস।
২২ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষাঙ্গনগুলো আবার প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে। আর ২ মার্চ থেকে শুরু হয় প্রাথমিকে সশরীরে ক্লাস। আর টানা দুই বছর বন্ধের পর আগামী ১৫ মার্চ থেকে প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস শুরুর ঘোষণা দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর সপ্তাহে প্রতিদিন ক্লাস করছে এসএসসি পরীক্ষার্থী ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। তবে তাদের সব বিষয়ের ক্লাস হচ্ছে না। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের চারটি ও দশম শ্রেণিতে তিনটি বিষয়ে ক্লাস হচ্ছে। এ ছাড়া অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে সপ্তাহে দুই দিন তিন বিষয়ে এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে এক দিন তিন বিষয়ের ক্লাস হচ্ছে।
একই সঙ্গে প্রাথমিকেও শুধু পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ছয় দিন ক্লাসে আসছিল। আর তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে দুই দিন ক্লাসে অংশ নেয়। অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে এক দিন ক্লাসে অংশ নেয়।
এর আগে গত ১২ মার্চ এক অনুষ্ঠানে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুরোদমে ক্লাস শুরুর ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে আমরা এতদিন ক্লাস শুরু করতে পারিনি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। শিক্ষার্থীদেরও টিকার আওতায় আনা হয়েছে। এ অবস্থায় আগামী ১৫ মার্চ থেকে স্বাভাবিক নিয়মে ক্লাস শুরু করা হবে।’