রাজধানীর অভিজাত এলাকা নিকুঞ্জে ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট নিরীক্ষা ও গোয়েন্দা অধিদপ্তর।
সম্প্রতি সেখানে অভিযানের পর গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটি দুই মাসে প্রায় আড়াই কোটি টাকার বিক্রয় তথ্য গোপন করেছে। এতে প্রায় ৫৮ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দেয়া হয়েছে।
এ ফাঁকির অভিযোগে রিজেন্সি হোটেলের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বলে সোমবার নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন ভ্যাট গোয়েন্দা ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড.মইনুল খান।
গোয়েন্দারা জানান, ভ্যাট ফাঁকির সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভ্যাট গোয়েন্দা দপ্তরের উপপরিচালক অথেলো চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি দল সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পায়।
অভিযান চলাকালে প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক দলিলাদি ও ভ্যাটসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র, কম্পিউটার এবং বিক্রয় রেজিস্টার জব্দ করা হয়।
এতে দেখা যায় যে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোট ৫ কোটি ৬ লাখ ৭০ হাজার ৭৯২ টাকার বিক্রয় তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু এ সময় প্রতিষ্ঠানটির মাসিক ভ্যাট রিটার্নে ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা দেখানো হয়।
রিটার্নে ৪৭ লাখ ৪৪ হাজার টাকার বিক্রয়তথ্য গোপন করা হয়েছে। ফলে এখানে ফাঁকি দেয়া হয় ৭ লাখ ১১ হাজার ৬৯২ টাকা।
যথাসময়ে ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা না দেয়ায় ২ শতাংশ হারে অতিরিক্ত জরিমানা বাবদ ভ্যাট আসে ৫ লাখ ১২ হাজার ৪১৮ টাকা। তদন্তে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে মোট ৫ কোটি ৭৩ লাখ ২০ হাজার ৯৭৪ টাকার বিক্রয় তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু এ সময় প্রতিষ্ঠানটি রিটার্নে দেখায় ৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা ।
এতে দেখা যায়, ১ কোটি ৯৩ লাখ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপন করা হয়েছে। ফলে এখানে ভ্যাট ফাঁকি গেছে প্রায় ২৯ লাখ টাকা।
এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় আইন অনুযায়ী মাসিক ২ শতাংশ হিসেবে জরিমানা বাবদ ভ্যাট আসে ১৬ লাখ ৭৬ হাজার ৭৬৭ টাকা।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, অভিজাত হোটেলটি মাত্র ২ মাসে ভ্যাট বাবদ ৩৬ লাখ ২ হাজার ৬৭০ টাকা এবং সুদ বাবদ ২১ লাখ ৮৯ হাজার ১৮৬ টাকাসহ মোট ৫৭ লাখ ৯১ হাজার ৮৫৬ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।