রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় সাক্ষ্য দিতে আদালতে আসেননি সাক্ষী।
ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলমের আদালতে সোমবার মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য তারিখ ঠিক ছিল। কিন্তু এদিন কোনো সাক্ষীকেই রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে হাজির করতে পারেনি।
আদালত আগামী ৩ এপ্রিল সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য পরের দিন ঠিক করেছে।
এদিন মামলার দুই আসামি নাজনীন ফেরদৌস ও জিনাত আক্তার আদালতে হাজিরা দেন।
মামলাটিতে অভিযোগপত্রের অন্তর্ভুক্ত মোট ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত ১০ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
২০১৯ সালের ২০ মার্চ দুই শিক্ষককে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক কামরুল হাসান তালুকদার।
২০১৯ সালের ১০ জুলাই ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলম দুইজনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
২০১৮ সালে ৩ ডিসেম্বর রাজধানীর শান্তিনগরে নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় অরিত্রী।
মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন।
ঘটনার পরদিন রাজধানীর পল্টন থানায় ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতি শাখার প্রধান জিনাত আক্তার ও শ্রেণি-শিক্ষিকা হাসনা হেনার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী মামলা করেন।
এজাহারে অরিত্রীর আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে বলা হয়, অরিত্রীর স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। ২০১৮ সালের ২ ডিসেম্বর সমাজবিজ্ঞান পরীক্ষা চলার সময় তার কাছে একটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। এ জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের (বাবা-মা) ডেকে পাঠায়। ৩ ডিসেম্বর স্কুলে গেলে স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায়, অরিত্রী মোবাইল ফোনে নকল করছিল, তাই তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এজাহারে অরিত্রীর বাবা আরও উল্লেখ করেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ মেয়ের সামনে আমাকে (বাবা) অনেক অপমান করেন । এ অপমান এবং পরীক্ষা দিতে না পারার মানসিক আঘাত সইতে না পেরে সে (অরিত্রী) আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
অরিত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্কুল কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় স্কুলের অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়।