বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘তুই পরবি শেরওয়ানি, কেন সাদা কাপড় পইরা আইলি’

  •    
  • ১৪ মার্চ, ২০২২ ১৫:৩৭

মমতাজ বেগম বলেন, ‘খালামণি প্রধানমন্ত্রী কথা বলছে, আমাদের নিরাপত্তা দিছে। খাবার আছে ১ মাসের, আপনে চিন্তা কইরেন না। পরে আবার কইলাম বাবা তুমি জাহাজের ওপরে উঠো না। তুমি নিরাপদে থাইকো। ও আমার কাছে থাইকা মানুষ। ওর বাবা-মা তো বাড়িতে থাকে। আমি কেমনে বুঝ দিমু।’

‘ওরে বাবা হাদিসুর, তুই কেন কাফনের কাপড় পইরা আইলি রে? এর আগে আসার পর কইছি তুই বিয়া কইরা যা। ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে আমারে কয় খালামণি তুমি মাইয়া দেইখা রাইখো, আমি আর অমত করমু না। আমি আইসা বিয়া করমু। তুই তো শেরওয়ানি পরবি, তুই কেন সাদা কাপড় পইরা আইলি; ওরে হাদিসুর রে...।’

ঢাকার আন্তর্জাতিক শাহজালাল বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটের সামনে এভাবেই বিলাপ করছিলেন ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে গোলায় নিহত থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের খালা শিরিন আক্তার মমতাজ ।

সোমবার হাদিসুরের মরদেহ দেশে এসে পৌঁছায়। সেই লাশ সংগ্রহ করতে এসেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

হাদিসুরের খালা মমতাজ বলেন, ‘ওরে আমি জাহাজের ওপরে উঠতে না করছি। তুই কেন জাহাজের ওপরে উঠলি। ও তো শেরওয়ানি পরবে, ও কেন সাদা কাপড় পইরা আসলো।’

বিলাপ করতে করতে কান্নায় ভেঙে পড়েন মমতাজ।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৩টায় হাদিসুরের সঙ্গে কথার প্রসঙ্গ টেনে তার খালা মমতাজ বেগম বলেন, ‘খালামণি প্রধানমন্ত্রী কথা বলছে, আমাদের নিরাপত্তা দিছে। খাবার আছে এক মাসের, আপনে চিন্তা কইরেন না। পরে আবার কইলাম বাবা তুমি জাহাজের ওপরে উঠো না। তুমি নিরাপদে থাইকো। ও আমার কাছে থাইকা মানুষ। ওর বাবা-মা তো বাড়িতে থাকে। আমি কেমনে বুঝ দিমু।’

জাহাজের ছাদে উঠছিল ছোট ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলতে বলে যোগ করেন তিনি।

হাদিসুরের চাচাতো ভাই সোহাগ হাওলাদার বলেন, ‘ভাই তোরে আমি রিসিভ করতে আইছি, কই তুই। তোরে ছাড়া এহন কেমনে বাঁচমু। আমার ভাই কত ভালো আছিলো, গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াইতো। তোর নাহান মিষ্টি মিষ্টি কথা এহন কে কইবে।’

বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাছানুর রহমান রিমনও এই লাশ সংগ্রহ করতে যান।

হাদিসুরের বাবা-মা অসুস্থ থাকায় বিমানবন্দরে যেতে পারেননি। আছেন গ্রামের বাড়ি বরগুনার বেতাগীতে।

লাশ নিতে এসেছেন হাদিসুরের চাচা মিজানুর রহমান জীবন, ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্সসহ পরিবারের আরও অনেক কয়েকজন সদস্য।

বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সরকারি সংস্থা। শিপিং করপোরেশনের মালিকানাধীন ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজটি ২৯ জন নাবিক ও ইঞ্জিনিয়ার নিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছায়।

২৪ ফেব্রুয়ারি সেখানেই অবস্থান করছিল জাহাজটি। ওই দিন ভোরেই রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরু করে। হামলার সপ্তম দিনে বাংলাদেশি জাহাজে গোলার আঘাতের ঘটনা ঘটে। সেই গোলায় প্রাণ হারান হাদিসুর রহমান।

সোমবার বেলা ১টা ১০ মিনিটে হাদিসুরের মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে করে বিমানবন্দর এলাকা ছেড়ে যায়।

এ বিভাগের আরো খবর