অবসরের পর প্রধান বিচারপতিদের জন্য ৭০ হাজার টাকা বিশেষ ভাতার বিধান রেখে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) আইন-২০২২-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সচিবালয়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। এতে গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন সরকারপ্রধান।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘এটা অধ্যাদেশ ছিল। এ জন্য আইনে পরিণত করা হচ্ছে। এখানে দুই-একটা জিনিস নিয়ে আসা হয়েছে। পেনশনযোগ্য কর্মকাল অর্থ প্রকৃত কর্মকাল এবং পূর্ণ বেতনে প্রত্যেক ছুটির মেয়াদে ৩০ দিন অথবা প্রকৃতপক্ষে গৃহীত ছুটির পরিমাণ উভয়ের মধ্যে যেটি কম, সেটি অন্তর্ভুক্ত হবে।
‘কোনো বিচারক পূর্ণ গড় বেতনে ছুটিতে থাকাকালে তার নির্ধারিত মাসিক বেতনের সমান হারে ছুটিকালীন বেতন পাবেন। কোনো বিচারক অর্ধ গড় বেতনে ছুটিতে থাকাকালীন আমাদের যে সরকারি বিধান আছে, সে অনুযায়ীই উনারা ছুটি পাবেন।’
তিনি বলেন, ‘কোনো বিচারক দায়িত্বকালীন আহত হয়ে অক্ষম হলে বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি পাবেন। এ ক্ষেত্রে ফান্ডামেন্টাল রুলের তিরাশির বিধানই যথাসম্ভব প্রযোজ্য হবে। কোনো বিচারক কোনো সহিংস ঘটনায় আহত বা নিহত হলে এ বিষয়ে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য বিধান উক্ত বিচারকের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনসহ প্রযোজ্য হবে।
‘আর কোনো বিচারক অবসর গ্রহণকালে ছুটি পাওনা সাপেক্ষে ১৮ মাসের ছুটি নগদায়নের সুবিধা পাবেন, যেটা সরকারি কর্মচারীরা পায়। এটা সুপ্রিম কোর্টের জাজদের বেলায় ছিল না। এখন যদি উনাদের ছুটি পাওনা থাকে, তাহলে উনারাও পাবেন।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘কোনো অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি তার জীবদ্দশায় গৃহসহায়ক, গাড়িচালক, দারোয়ান সেবা, সাচিবিক সহায়তা এবং অফিস কাম রেসিডেন্স রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতি মাসে ৭০ হাজার টাকা অবসরোত্তর বিশেষ ভাতা পাবেন। আরেকটা জিনিস প্রস্তাব করা হয়েছে যে, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে একটা সার্টেইন পিরিয়ড (নির্দিষ্ট সময়) পর্যন্ত নিরাপত্তা দেয়া রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। এটা ক্যাবিনেট আলোচনা করে বলেছে যে, এটা আইনের মধ্যে থাকার দরকার নেই।
‘এটা সরকার মনে করলে এক্সিকিউটিভ অর্ডার দিয়ে তাদের দিতে পারবে; এটা আইনে আনা যাবে না। কারণ অন্যান্য কোনো দেশের আইনে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে অবসরের পরে নিরাপত্তা কত দিন দিতে হবে, এটা নেই। সে জন্য সরকার মনে করে যে, যদি কারও ক্ষেত্রে সেনসিটিভিটি (সংবেদনশীলতা) থাকে, সে ক্ষেত্রে সরকার নির্বাহী আদেশ দিয়ে তাকে একটা নির্ধারিত সময় পর্যন্ত নিরাপত্তা দেবে।’