ইউক্রেনে সামরিক অভিযান নিয়ে দেশের কিছু সংবাদমাধ্যম পক্ষপাতদুষ্ট খবর প্রকাশ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশে রাশিয়ার দূত আলেকজান্ডার মানতিতস্কি।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমগুলোকে খোলা চিঠিতে রোববার পক্ষপাতমূলক খবর প্রচার না করার আহ্বান জানিয়ে ইউক্রেন অভিযানের কারণ ব্যাখ্যা করেন মানতিতস্কি।
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন ইস্যু নিয়ে পশ্চিমা সংবাদ সংস্থার পাশাপাশি ইউরোপীয় এবং আমেরিকান সংস্থাগুলোর লেখা সংগ্রহ করেছি। এসবে রুশবিরোধী প্রচারণা রয়েছে। কিছু লেখা ভীষণ পক্ষপাতমূলক।
‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলোর অনুসরণ করে বাংলাদেশের কিছু সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে এ ধরনের প্রচারণা চলছে।’
ইউক্রেন অভিযানের বিষয়ে রুশ দূত বলেন, ‘কিয়েভে রুশ ভাষাভাষীদের ওপর ৮ বছর ধরে গণহত্যা চালাচ্ছে ইউক্রেন। আমরা তা বন্ধ করতে চাই, নব্য ফ্যাসিবাদ নির্মূল করতে চাই। সেখানে পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার বন্ধ করে ন্যাটোর সামরিক ঘাঁটি স্থাপন আটকাতে চাই।’
চিঠিতে ইউক্রেনে রুশ বাহিনী যা করবে তারও ব্যাখ্যা দেন রুশ দূত মানতিতস্কি। বলেন, ‘গ্রেট প্যাট্রিয়টিক যুদ্ধে হারের পর ইউক্রেনে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা নব্য ফ্যাসিবাদের অবসান ঘটানো হবে। সেই সঙ্গে রাশিয়ান ফেডারেশনের সীমান্তের সামরিক হুমকি দূর করা হবে। আইন মেনে ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিক ও রুশ নাগরিকদের ওপর নিপীড়ন চালিয়েছে এমন ব্যক্তিদের শনাক্ত করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
রাশিয়ার পার্লামেন্টের অনুমতি নিয়ে জাতিসংঘ সনদের ৫১ ধারার সপ্তম অধ্যায় অনুসরণ করেই ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর অভিযান চালানো হচ্ছে বলে চিঠিতে দাবি করেন মানতিতস্কি।
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের সঙ্গে আমরা যুদ্ধ করছি না। নিরাপত্তা হুমকিতে থাকায় এই অবস্থান নিয়েছি।’
ঢাকা-মস্কোর মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থনে অবাঙালি শাসকদের আধিপত্য, বাঙালিদের হয়রানি, বৈষম্য ও সহিংসতা বন্ধ করতে বাংলাদেশের ৯ মাস সময় লেগেছিল। স্বাধীনতা পেয়েছিল, নিজেদের ভাষায় কথা বলার অধিকার পেয়েছিল।
পূর্ব ইউক্রেনের রুশভাষীরা গত ৮ বছর ধরে একই অধিকারের জন্য লড়াই করছে। কিয়েভের শাসকদের হাতে তারা গণহত্যার শিকার হচ্ছে। তাদের মাতৃভাষা বলার অধিকার নিশ্চিত করতে রাশিয়া আবারও এগিয়ে এসেছে।’