অর্থপাচার মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের মালিকানাধীন পুলিশের জিম্মায় থাকা সাউথ লাইন পরিবহনের ১২টি বাস পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান রোববার তিন সদস্যের এ কমিটি গঠন করেন। আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও তদন্ত) মো. ইমদাদ হোসেনকে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. হেলালউদ্দিন।
নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, ‘বাস পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। বাসের নিরাপত্তায় নিয়োজিত নৈশ্য প্রহরী শেখ মোহাম্মদ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
এ ঘটনায় আজ জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, ‘বাসগুলো পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনাটি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।’
এর আগে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল গফ্ফার গত শনিবার রাতে এ ঘটনাকে নাশকতা উল্লেখ করে একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যাক্তিদের আসামি করা হয়।
এর আগে দুই হাজার কোটি টাকার অর্থপাচার মামলায় আদালতের মাধ্যমে সাউথ লাইন পরিবহনের ২২টি বাস আলামত হিসেবে জব্দ করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঢাকা।
বাসগুলো রক্ষণাববেক্ষণের দায়িত্বে ছিল জেলা পুলিশ। এগুলো শহরের গোয়ালচামটস্থ ওজোপডিকো কার্যালয়ের সামনে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পশ্চিম গোয়ালচামট মহল্লায় সাজ্জাদ হোসেন বরকাতের মালিকানাভুক্ত জায়গায়।
বাসগুলোর ১০টি সেড দিয়ে ঘেরা ছিল ও ১২টি ওই জায়গার পাশে নিচু জমিতে রাখা ছিল। গত শুক্রবার রাত পৌনে ১টার দিকে ১২টি বাসের সামনের সাড়ির দক্ষিণ দিক থেকে দ্বিতীয় বাসে আগুন জ্বলে উঠতে দেখা যায়।
মুহূর্তের মধ্যে আগুন অন্য বাসে ছড়িয়ে পড়ে। পরে দমকল বাহিনীর একটি দল দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় রাত আড়াইটার দিকে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। কিন্তু ততক্ষণে ওই ১২টি বাস পুড়ে যায়।
পুড়ে যাওয়া বাসগুলো অর্থপাচার মামলায় গ্রেপ্তার শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ফরিদপুর প্রেসক্লাবের বহিষ্কৃত সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের মালিকানাধীন।
জানা যায়, ২০২০ সালের ১৬ মে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১৮ মে মামলা করেন সুবল সাহা। এ ঘটনার জের ধরে ২০২০ সালের ৭ জুন পুলিশের বিশেষ অভিযানে ফরিদপুর-৩ আসনের সাংসদ খন্দকার মোশাররফ হোসেনের শহরের বাড়ি আফসানা মঞ্জিল থেকে তার উপস্থিতিতে বরকত-রুবেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
২৬ জুন বরকত রুবেলের নামে ঢাকার কাফরুল থানায় দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করে সিআইডি ঢাকা। মামলার আলামত হিসেবে বাসগুলো জব্দ করে সিআইডি।