নেত্রকোণার দুর্গাপুরের সাংবাদিক রিফাত আহমেদ রাসেলের বিরুদ্ধে এবার চাঁদা দাবির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় পৌরসভার মেয়র আলাউদ্দিন আলাল।
দুর্গাপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন আলাল। এ সময় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদগুলোকেও মিথ্যা দাবি করেন তিনি।
রোববার দুপুরে দুর্গাপুর উপজেলা প্রেসক্লাবে আলাউদ্দিন আলালের আহ্বানে ওই সংবাদ সম্মেলনে নেত্রকোনা সদরের কয়েকজনসহ দুর্গাপুরে স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে আলাল একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এবং তা উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে সরবরাহ করেন।
লিখিত বক্তব্যে আলাউদ্দিন আলাল দাবি করেন, রিফাত আহমেদ রাসেল সাংবাদিকতার নাম ভাঙিয়ে তেরিবাজার ঘাট এলাকার বালুমহাল থেকে ট্রাকপ্রতি ৫০০ টাকা করে চাঁদা দাবি করেছেন। এ ছাড়া সীমান্ত এলাকার কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কাছ থেকেও চাঁদা আদায় করছেন। ওই ব্যবসায়ীরা তার কাছে রিফাতের বিরুদ্ধে বিচার দিয়েছেন।
এ ছাড়া রিফাত সম্প্রতি ফেসবুকে একটি আপত্তিকর পোস্ট দেন, যাতে কারও নাম না উল্লেখ করলেও তাকে জড়িয়েই লিখেছেন বলে মনে করেন আলাল। তাই এসব কারণে তিনি প্রতিবেশী ভাতিজা সম্পর্কীয় রিফাতকে চেম্বারে ডেকে এনে ধমক দিয়েছেন এবং শাসন করেছেন।
আলাল জানান, তার ধমক ও শাসনের অর্ধেক বাদ দিয়ে বাকি কিছু কথা রেকর্ড করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, থানার জিডিতে এবং নেত্রকোনা সদরের মানববন্ধনে তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে তা মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। এতে তিনি সমাজে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন। বিষয়টি মীমাংসায় সকল সাংবাদিকদের সহযোগিতাও চান তিনি।
সাংবাদিক সম্মেলনে মেয়রের সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব উদ্দিন তালুকদার, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, ব্যবসায়ী নেতা অঞ্জন সরকার লিটনসহ দুর্গাপুর পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।
দুর্গাপুর উপজেলা প্রেসক্লাবে লিখিত বক্তব্য পাঠ করছেন পৌর মেয়র আলাউদ্দিন আলাল
আলালের অভিযোগ সম্পর্কে সাংবাদিক রিফাত আহমেদ রাসেল বলেন, ‘আলাল সাহেব আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তুলেছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। নিজের অন্যায় ঢাকতেই মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছেন তিনি। আমি চাঁদাবাজি করি কি না তা দুর্গাপুরের যারা আমাকে চেনেন, তারা সবাই জানেন।’
এ ব্যাপারে দুর্গাপুর থানার ওসি মীর মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘রিফাত আহমেদ রাসেলের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে কেউ কখনও কোনো ধরনের অভিযোগ করেননি।’
রিফাত জানান, গত বুধবার সন্ধ্যায় তিনি বালুমহাল ইজারার নামে সোমেশ্বরী নদী ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কথা উল্লেখ করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। এতে কারও নাম উল্লেখ করেননি তিনি। ওই স্ট্যাটাসে চরম ক্ষুব্ধ হন বালু ব্যবসায় জড়িত দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র আলাল। পরে তিনি সন্ধ্যার পর রিফাতকে বাসায় ডেকে নিয়ে অকথ্য গালাগাল করেন। এ ছাড়া প্রাণনাশ ও এলাকা ছাড়া করারও হুমকি দেন। এ সময় ধারণ করা ৯ মিনিটের অডিও রেকর্ডে তার হুমকি ও গালাগালের প্রমাণ আছে।
এ ব্যাপারে রিফাত গত শুক্রবার দুর্গাপুর থানায় একটি জিডি করেন। এ ছাড়া নেত্রকোণা জেলা সদরে কর্মরত সাংবাদিকরা শনিবার দুপুরে আলালের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।