নির্মাণসামগ্রীর লাগামহীন দাম বৃদ্ধির ফলে চট্টগ্রামে কাজ বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে এলজিইডি ঠিকাদার সমিতি।
দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে রোববার অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচিতে এ হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ষোলশহর এলজিইডি ভবনের সামনে এ কর্মসূচীতে অংশ নেন ঠিকাদাররা।
এ সময় অনুষ্ঠিত সমাবেশে নির্মাণসামগ্রীর দামের লাগাম টানতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা। সমাবেশ থেকে এলজিইডির চলমান কাজের রেট পুণনির্ধারণ করার দাবিও জানান বক্তারা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, এ সময়টা পুরোদমে কাজ করার মৌসুম হলেও বর্তমানে প্রকল্পের কাজ ২৫ শতাংশে নেমে এসেছে। দিন দিন নির্মাণসামগ্রীর দাম এভাবে বাড়তে থাকলে কাজ চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নির্মাণসামগ্রীর মূল্য ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেলে সেটি প্রকল্প ব্যয়ের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়। সেটি না হলে প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দেয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।
এলজিইডি ঠিকাদার সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে এলজিইডি ছাড়াও অন্যান্য বিভাগের ঠিকাদাররা যোগ দেন।
সমাবেশে চট্টগ্রাম এলজিইডি ঠিকাদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান টিটু বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইট, বালু, সিমেন্ট ও রডের দামও বেড়েছে। একই সময় প্রায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে ইলেকট্রিক, হার্ডওয়্যার, সেনেটারিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম। দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির ফলে বেড়েছে নির্মাণ শ্রমিকের দৈনিক মজুরিও।
‘আগে একজন নির্মাণ শ্রমিকের মজুরি ছিল ৫০০ টাকা, বর্তমানে তা ৮০০ টাকা। এ ছাড়া টনপ্রতি ৫০ হাজার টাকার রড এখন ৮১ হাজার টাকা। আমদানি করা পাথরের টন আগে ছিল ৩৪ হাজার টাকা, এখন তা ৫১ হাজার। এভাবে সব পণ্যের দাম বাড়লেও এলজিইডির রেট পুণনির্ধারন করা হয়নি।’
সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মহামারীর ধকল কাটিয়ে ওঠার এ সময়ে নির্মাণ উপকরণের উচ্চমূল্য চোখ রাঙাচ্ছে নির্মাণ কাজে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে রড; পৌঁছেছে সাম্প্রতিক সময়ের সর্বোচ্চ দরে। ‘এতে সরকারি উন্নয়ন কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত ঠিকাদারদের হিমশিম অবস্থা, অনেকেই দেউলিয়া হয়েছেন। বাজেটে কুলোচ্ছে না বলে থমকে গেছে অধিকাংশ নির্মাণ কাজও; পরিকল্পনা করেও বসে আছেন অনেকেই।’
তিনি বলেন, ‘রডের দাম সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে এখন সবচেয়ে বেশি। দরবৃদ্ধিতে ক্রমাগত উত্তাপ ছড়াতে ছড়াতে গত এক বছরেই উচ্চমূল্যের কাতারে পৌঁছে গেছে নির্মাণকাজের অত্যাবশক এ উপকরণ।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঠিকাদার মহিউদ্দিন সুফল, আলী হোসেন, মহসিন হায়দার নজরুল ইসলাম, সালাউদ্দিন লিটন, সাইফুল ইসলাম, শওকত হোসেন, মো. ইলিয়াছ চৌধুরি, আবদুল্লাহ টিটু, জামশেদ চৌধুরি, জাহাঙ্গীর আলমসহ অনেকে।
সমাবেশ শেষে ঠিকাদাররা এলজিইডি ভবনের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি নগরীর মুরাদপুর হয়ে আবার এলজিইডি ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।