বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিনিয়োগ বাড়ানোর ঘোষণা, কমল লেনদেন

  •    
  • ১৩ মার্চ, ২০২২ ১৫:১৫

পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল থেকে ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের নির্দেশ, এক দিনে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ নির্ধারণের আদেশ দেয়ার পর চার দিনে সূচকে যোগ হলো ৩০৯ পয়েন্ট। তবে সূচক হারানো অবস্থান ফিরে পেলেও লেনদেনে সেভাবে গতি আসেনি এখনও। বরং গত বৃহস্পতিবার লেনদেন এক হাজার কোটি টাকার ঘর ছাড়ালেও রোববার তা আবার নেমে এসেছে হাজার কোটির নিচে।

পুঁজিবাজারে ধস ঠেকাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার দুটি পদক্ষেপের পর টানা চার কর্মদিবস বাড়ল সূচক। আগের সপ্তাহের শেষ তিন দিনে দুইশ পয়েন্টের বেশি সূচক বাড়ার সুখস্মৃতি নিয়ে নতুন সপ্তাহের প্রথম দিনও প্রায় একশ পয়েন্ট যোগ হলো।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার প্রতিক্রিয়ায় আট কর্মদিবসে ৩৮২ পয়েন্ট সূচক পতনে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল, সেটি কেটেছে অনেকটাই।

পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল থেকে ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের নির্দেশ, এক দিনে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ নির্ধারণের আদেশ দেয়ার পর চার দিনে সূচকে যোগ হলো ৩০৯ পয়েন্ট।

তবে সূচক হারানো অবস্থান ফিরে পেলেও লেনদেনে সেভাবে গতি আসেনি এখনও। বরং গত বৃহস্পতিবার লেনদেন এক হাজার কোটি টাকার ঘর ছাড়ালেও রোববার তা আবার নেমে এসেছে হাজার কোটির নিচে।

৯ কর্মদিবস পর বৃহস্পতিবার লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে হয়েছিল এক হাজার ৬১ কোটি ২০ লাখ ৬৬ হাজার টাকা।

পরের কর্মদিবসে সেটি কমে হয়েছে ৯৯৮ কোটি ৭৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকা।

রোববারের এই উত্থানে চার কর্মদিবস মিলিয়ে ডিএসইর সূচকে যোগ হলো ৩০৯ পয়েন্ট

অথচ দরপতন ঠেকাতে বিএসইসি এই দুটি সিদ্ধান্তের সঙ্গে তারল্য বাড়াতেও ব্যাংক ও সম্পদ ব্যবস্থাপকদের সঙ্গেও বৈঠকে বসেছিল। দুই পক্ষই বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে একমত হয়।

বুধবার প্রথম বৈঠক শেষে ঘোষণা ছিল, যেসব ব্যাংকের বিনিয়োগ তাদের মূলধনের ২৫ শতাংশের নিচে, সেগুলো দ্রুত ২ শতাংশ বিনিয়োগ বাড়াবে। যেসব কোম্পানি বিশেষ তহবিলে এখনও ২০০ কোটি টাকা জমা দেয়নি, সেগুলো দ্রুত জমা দেবে, আর যেসব ব্যাংক টাকা জমা দিয়েও বিনিয়োগে যায়নি, তারা দ্রুত বিনিয়োগে যাবে।

পরের দিন মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর সঙ্গে বৈঠক শেষে জানানো হয়, মৌলভিত্তির অনেক কোম্পানির শেয়ারদর অনেকটাই কমে এসেছে। এই মুহূর্তে সেগুলোতে বিনিয়োগ লাভজনক হতে পারে। বিনিয়োগ বাড়ানোর ঘোষণা আসে এই বৈঠক শেষেও।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছাইদুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একটা বড় ধাক্কা সামলে বাজার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। পতন ঠেকাতে বিএসইসির পদক্ষেপগুলো কাজে দিচ্ছে। আশা করছি বাজার এখন আস্তে আস্তে ভালোর দিকে যাবে। গত কয়েক দিনের লেনদেনে তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।’

লেনদেন সেভাবে না বাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একটা বড় ধসের পর সবাই এখন সতর্ক বিনিয়োগ করছে। সে কারণেই লেনদেন ধীরে ধীরে বাড়ছে। হঠাৎ করে বেশি লেনদেন হওয়াটাও কিন্তু বাজারের জন্য ভালো না। আমি মনে করি বর্তমান বাজারে এক-দেড় হাজার টাকা লেনদেন হলে মন্দ নয়।

‘তারা রাতারাতি বিনিয়োগ বাড়াবে-এমনটা ভাবা ঠিক নয়। বাজারের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে তারা বিনিয়োগ বাড়াাচ্ছে। ভবিষ্যতে তাদের বিনিয়োগ আরও বাড়বে বলে আমি আশা করছি।’

স্থিতিশীলতা তহবিল, ব্যাংক ও সম্পদ ব্যবস্থাপকদের বিনিয়োগ বাড়ানোর সম্মিলিত ঘোষণার পর রোববার সকাল থেকেই লেনদেন হয় সূচক বেড়ে। ৯ পয়েন্ট বেড়ে শুরু হওয়া লেনদেন বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে আরও বেশি। লেনদেন শেষের কিছুক্ষণ আগে তা বেশি ছিল ১১১ পয়েন্ট। তবে শেষ সময়ের সমন্বয়ে ৯৭ পয়েন্ট বেড়ে শেষ হয় লেনদেন।

বেড়েছে ২৭৩টি কোম্পানির শেয়ারদর, কমেছে ৮৭টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২০টির দর।

আর্থিক খাতের কোনো কোম্পানির শেয়ারের দর কমেনি। দুটি কোম্পানির দর ছিল অপরিবর্তিত, বেড়েছে বাকি সবগুলোর।

বস্ত্র খাতে কমেছে ৫টি কোম্পানির দর, অপরিবর্তিত ছিল আরও ৫টির, বেড়েছে বাকি ৪৮টির দর।

ওষুধ ও রসায়ন, জ্বালানি, মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ব্যাংক, প্রকৌশল, বিবিধ ও সিরামিক খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির বিনিয়োগকারীরাই হাসিমুখে শেষ করেছে লেনদেন।

সূচক বাড়ানোর প্রধান ভূমিকায় বহুজাতিক কোম্পানি

প্রায় একশ পয়েন্ট সূচকের প্রায় এক তৃতীয়াংশই বাড়িয়েছে বহুজাতিক চারটি কোম্পানি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৩.৬২ শতাংশ বাড়িয়েছে গ্রামীণফোন। কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ১.৯৬ শতাংশ।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১.৫২ শতাংশ দর বৃদ্ধিতে সূচকে ৭.৬১ পয়েন্ট যোগ করেছে ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানি।

লাফার্জ হোলসিম সিমেন্টের দর বেড়েছে ৫.০৭ শতাংশ, কোম্পানিটি সূচকে যোগ করেছে ৬.৩২ পয়েন্ট। আর রবি যোগ করেছে ৫.০৩ পয়েন্ট। কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ১.৬৭ শতাংশ।

অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে স্কয়ার ফার্মা ৩.৫৫ পয়েন্ট, বেক্সিমকো লিমিটেড ৩.৩৭ পয়েন্ট, পাওয়ারগ্রিড ২.২৮ পয়েন্ট, বেক্সিমকো ফার্মা ২.২১ পয়েন্ট, সামিট পাওয়ার ২.০৫ পয়েন্ট এবং সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি ১.৮ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচকে যোগ করেছে ৪৭.৮৪ পয়েন্ট। এর মধ্যে বহুজাতিক চার কোম্পানির ভূমিকাই ৩২.৫৮ পয়েন্ট।

অন্যদিকে সূচক থেকে ৩.০৬ পয়েন্ট হারিয়েছে ওয়ালটনের ০.৫৮ শতাংশ দরপতনে।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ০.৭৭ পয়েন্ট সূচক কমেছে লিনডে বিডির শেয়ারের ১.৯৮ শতাংশ দরপতনে।

রেকিট বেনকিনজারের ১.৬৬ শতাংশ দরপতনে সূচক কমেছে ০.৬৯ শতাংশ।

এছাড়া ডেল্টা লাইফের কারণে ০.৩৮ পয়েন্ট, ফরচুন সুজের দরপতনে ০.৩৪ পয়েন্ট, তমিজউদ্দিন টেক্সটাইলের কারণে ০.২৭ পয়েন্ট, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের দরপতনে ০.২১ পয়েন্ট, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স ও ফারইস্ট লাইফের দরপতনে সূচক কমেছে ০.২০ পয়েন্ট করে এবং ব্যাংক এশিয়ার দরপতনে সূচক কমেছে ০.১৯ পয়েন্ট।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৬ পয়েন্ট।

লভ্যাংশ ঘোষণা করা তিন কোম্পানির চিত্র

বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে লভ্যাংশ ঘোষণা করা তিনটি কোম্পানিই রোববার দর হারিয়েছে।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫.১৯ শতাংশ দর হারিয়েছে ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানিটি গত ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরের হিসাব পর্যালোচনা করে শেয়ার প্রতি এক টাকা লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।

কোম্পানিটির আয় কমে গেছে। আগের বছরে শেয়ার প্রতি আয় ছিল ২ টাকা ৪ পয়সা, সেটি এবার কমে হয়েছে ১ টাকা ৬৫ পয়সা।

আগের দিন শেয়ার দর ছিল ৫৫ টাকা ৮০ পয়সা। দিন শেষে তা দাঁড়িয়েছে ৫২ টাকা ৯০ পয়সা। তবে এক পর্যায়ে দাম কমে ৪৮ টাকা হয়ে গিয়েছিল।

শেয়ার প্রতি ৫৫ টাকা লভ্যাংশের ঘোষণায় লিনডে বিডির শেয়ারদর কমেছে ৩১ টাকা ৪০ পয়সা। তবে কোম্পানটির আয় গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। এক পর্যায়ে দাম ৬৩ টাকা কমে গিয়েছিল।

অন্যদিকে শেয়ার প্রতি ১৬৫ টাকা লভ্যাংশ ঘোষণার প্রস্তাবে রেকিড বেনকিনজারের শেয়ার দর হারিয়েছে প্রতিটি শেয়ার দর হারিয়েছে ৯০ টাকা ৮০ পয়সা। এই কোম্পানিটিও এক পর্যায়ে দর হারিয়ে ফেলে ১৪৬ টাকা ৯০ পয়সা।

এ বিভাগের আরো খবর