প্যাকেটের গায়ে মেয়াদ লেখা থাকলেও ভেতরে থাকা নাপা সিরাপের মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল বলে জানিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এ জন্য নির্দিষ্ট ব্যাচের নাপা সিরাপ শনাক্ত করে সেগুলো দ্রুত নিকটস্থ কেমিস্ট অফিসে জমা দিতে জেলা ও বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে সংস্থাটি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে নাপা সিরাপ খেয়ে দুই শিশুর মৃত্যু ঘটনায় তদন্তের পর শনিবার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের নাপা সিরাপের ব্যাচ নং-৩২১১৩১২১ মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল। ওই ব্যাচ নম্বরের কোনো সিরাপ কারও কাছে থাকলে দ্রুত নিকটস্থ কেমিস্ট অফিসকে জানাতে বলা হয়েছে।
যে সিরাপ খেয়ে শিশু দুটির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে সেটির প্যাকেটে উৎপাদনের তারিখ লেখা ছিল ১২/২০২১ এবং মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ছিল ১১/২০২৩।
আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের দুই শিশু ইয়াসিন ও মুরসালিন সর্দি-জ্বরে ভুগছিল। বাড়ির পাশের একটি দোকান থেকে গত বৃহস্পতিবার রাতে নাপা সিরাপ এনে তাদের সন্ধ্যার দিকে দুই চামচ করে খাওয়ানো হয়। রাতে অচেতন হয়ে পড়ে সুজন-লিমা দম্পতির দুই সন্তান।
প্রতিবেশীদের সহায়তায় দুই ছেলেকে ভর্তি করানো হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসক ইয়াসিন ও মুরসালিনকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে বিষয়টি পুলিশ জেলার সিভিল সার্জনকে জানালে তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়কে সন্তানহারা বাবার অভিযোগের কথা জানান।
অভিযোগ খতিয়ে দেখতে শুক্রবার বিকেলে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়। এদিন সন্ধ্যায় পুরো জেলায় হঠাৎ ওই সিরাপ বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি।
ঘটনা তদন্তে কমিটি করে দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালসের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর অনুসন্ধান করছে, তাই এখনি আমরা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। অধিদপ্তরের অনুসন্ধান শেষে যে রিপোর্ট পাওয়া যাবে, তারপর আমরা আমাদের ব্যাখা জানাব।’
একটি বড় কোম্পানির নির্দিষ্ট একটি ব্যাচে ২০ থেকে ৫০ হাজার সিরাপ উৎপাদন করে থাকে।