জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) সদ্য ভর্তি হওয়া নবীন শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ দলে ভিড়ানোকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক গ্রুপে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও টিএসসি এলাকার এ ঘটনায় পাঁচজন আহত হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আক্তার হোসেন গ্রুপের কয়েকজন নবীন শিক্ষার্থীদের দলে ভিড়ানোকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ফরাজি গ্রুপের ১৫ ব্যাচের একজনকে টিএসসিতে মারধর করেন।
পরে সভাপতি প্যানেলের কয়েকজন এসে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাধারণ সম্পাদক প্যানেলের দুজনকে মারধর করেন। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে পুরান ঢাকার মালিটলা পার্কে দুই গ্রুপের মধ্যে আবার মারামারি বাধে।
এতে সভাপতি গ্রুপের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের গাজী মো. শামসুল হুদা ও খাইরুল আমান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের আব্দুল বারেক, ফিন্যান্স বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মো. সাঈদ আহত হন।
এ ছাড়া সাধারণ সম্পাদক গ্রুপ থেকে ইসলামিক স্টাডিজ গ্রুপের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের মেরাজ হোসাইন আহত হন। সবাইকে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দুই গ্রুপকে লাঠি হাতে শোডাউন দিতে দেখা যায়।
আহত ছাত্রলীগ কর্মী আব্দুল বারেক বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে মালিটোলা পার্কের সামনে সভাপতির জন্য অপেক্ষা করার সময় ১২ ব্যাচের ছাত্রলীগ কর্মী সিফাত, শিশির ও মারুফের নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা করা হয়।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আক্তার হোসেন বলেন, ‘অনুপ্রবেশকারীরা ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করার জন্য ব্যক্তিগত স্বার্থে এসব কর্মকাণ্ড করছে। যারা মারামারি করেছে তারা ছাত্রলীগের কেউ নয়।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ফরাজি বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে এখনো অবগত নই। আমি দূরে অবস্থান করছি। বিষয়টি আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ভুলবোঝাবুঝি নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে শনাক্ত করে মারামারিতে জড়িত ছাত্রদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুসারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে আমাদের জানা নেই। আমাদের কাছে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি।’