বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সচেতনতার অভাবে গ্লুকোমায় অন্ধত্ব

  •    
  • ১২ মার্চ, ২০২২ ২২:৪৫

অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দেশে একসময় অল্প কয়েকজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ ছিলেন। কিন্তু এখন অনেক চিকিৎসক। আমরা গ্লুকোমায় অন্ধত্বরোধে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে এখন মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা জরুরি।’

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছায়েদা ফারিহা সাহিদা ইসলাম, তাকে দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারে সময় দিতে হয়। টানা কাজের কারণে তীব্র চোখের ব্যথা অনুভব করলে তিনি ২০১৬ সালের মার্চে চিকিৎসকের কাছে গেলে গ্লুকোমা ধরে পড়ে। লেজার থেরাপি দেয়া হয়েছে। এখন চলছে ফলোআপ চিকিৎসা।

সাহিদা বলেন, ‘পরীক্ষার সময় আমার চোখের প্রেশার ছিল ৪৭, যা ১০ থেকে ১২ থাকা উচিত। ইতোমধ্যে আমার দুটি সার্জারি হয়েছে, তবে চোখের ক্ষতিটা রয়েই গেছে। চিকিৎসক বলছেন, এই রোগ একবার হলে আর মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। আজীবন ফলোআপের ওপরে থাকতে হবে।’

গ্লুকোমা আক্রান্ত আরেক রোগী জানান, কিছুদিন আগে হঠাৎ করেই তার চোখের পাওয়ার কমে যাচ্ছিল। চিকিৎসকের কাছে গেলে জানতে পারেন তিনি গ্লুকোমায় আক্রান্ত৷ এর পর থেকে ফলোআপে আছেন। নিয়মিত ওষুধ নেয়ার মাধ্যমে তিনি প্রায় সুস্থ।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, গ্লুকোমা শনাক্তের পর রোগীকে আজীবন ফলোআপে থাকতে হয়। এটি এমন এক অন্ধত্ব, যার প্রতিকার নেই। তবে এ ধরনের অন্ধত্ব প্রতিরোধযোগ্য। এই রোগ প্রাথমিক পর্যায়ের শনাক্ত হলে অল্প চিকিৎসায় ভালো থাকা যায়।

বিশ্ব গ্লুকোমা সপ্তাহের শেষ দিনে শনিবার রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্টে আলোচনা অনুষ্ঠান ও সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন।

বিশ্ব গ্লুকোমা সপ্তাহের শেষ দিনে শনিবার রাজধানীতে ছিল আলোচনা অনুষ্ঠান। ছবি: নিউজবাংলা

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘গ্লুকোমা এমন একটি রোগ, যা নীরব ঘাতকের মতো কাজ করে। এ জন্য একে ছাই চাপা, তুষের আগুনের সঙ্গে তুলনা করা হয়। গ্লুকোমায় একবার চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা পুরোপুরি সুস্থ হয় না। অর্থাৎ রোগীর স্থায়ীভাবে ক্ষতি হয়ে যায়। তাই গ্লুকোমাকে প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত করতে হবে। রোগী প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা পেলে সুস্থ জীবন-যাপন করতে পারবেন।’

তারা আরও বলেন, ‘এটি একটি বংশগত রোগ। আত্মীয়স্বজনের মধ্যে বিয়ে হলে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রায় চার গুণ বেড়ে যায়। দেশে এর পরিপূর্ণ চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। দেশে গ্লুকোমার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছেন মোট ৯০ জন। এ ছাড়া দেশের সব চক্ষু চিকিৎসকই গ্লুকোমার চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত।

‘আমরা গ্লুকোমা তিনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি- ওষুধ, লেজার এবং সার্জারির মাধ্যমে। যেসব রোগীর অবস্থা অ্যাডভান্স পর্যায়ে তাদের সার্জারি করা হয়। যাদের সাধারণ পর্যায়ে আছে তাদের ওষুধ দেয়া হয়। তবে যাদের ওষুধে অ্যালার্জির সমস্যা হয় তাদের লেজার ট্রিটিমেন্ট দেয়া হয়। দেশে সর্বাধুনিক পদ্ধতিতে সার্জারির সফলতার হার প্রায় শতভাগ।’

অনুষ্ঠানে এশিয়া প্যাসিফিক অ্যাসোসিয়েশন অফ অপথালমোলজির সভাপতি অধ্যাপক ডা. আভা হোসেন বলেন, ‘ব্যথাসহ যে পরিমাণ রোগী আমাদের কাছে আসে তার থেকে বেশি আসে ব্যথা ছাড়া। আমরা সবাইকে পরামর্শ দিই ৩৫ বছরের বেশি বয়সী রোগীদের নার্ভ ও চোখের প্রেশার পরীক্ষার। তবে অনেক সময় প্রেশার স্বাভাবিক থাকলেও গ্লুকোমা হয়। এটি এমন এক অন্ধত্ব যা প্রতিরোধ করা যায়, তবে প্রতিকার করা যায় না।’

অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দেশে একসময় অল্প কয়েকজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ ছিলেন। কিন্তু এখন অনেক চিকিৎসক। আমরা গ্লুকোমায় অন্ধত্বরোধে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে এখন মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা জরুরি। এ লক্ষ্যেই গ্লুকোমা সপ্তাহ পালন করা হচ্ছে।’

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ গ্লুকোমা সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. হাসান শহীদ গ্লুকোমা রোগের গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গণমাধ্যমকে অগ্রণী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান এবং গ্লুকোমা রোগ প্রতিরোধে সবার সমন্বিত প্রচেষ্টা কামনা করেন।

এ বিভাগের আরো খবর