আগুনে পুড়ে গেছে ফরিদপুরে ২ হাজার কোটি টাকার অর্থপাচার মামলায় গ্রেপ্তার দুই ভাই বরকত-রুবেলের মালিকানাধীন সাউথ লাইন পরিবহনের জব্দ ১২টি বাস। বাসগুলোতে কীভাবে আগুন লাগল, সেটি জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে শহরের গোয়ালচামটে নতুন বাস টার্মিনালের পাশে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান আগুনে ১২টি বাস পুড়ে যাওয়ার এ তথ্য জানান।
এসপি বলেন, সেখানে ২২টি বাস রাখা ছিল। এর মধ্যে ১২টি বাসেই আগুন লাগে। দীর্ঘদিন বাস ফেলে রাখায় দ্রুতই বাসগুলোতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে বলে জানান তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে হঠাৎ করে দাউ দাউ করে বাসগুলোতে আগুন জ্বলতে দেখে লোকজন ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়। সারিবদ্ধভাবে খোলা জায়গায় রাখা গাড়িগুলোতে হঠাৎ কীভাবে আগুন লাগল, সেটি কেউ বলতে পারেননি।
রাতে আগুনে পোড়া বাস দেখতে উৎসুক লোক। ছবি: নিউজবাংলা
এ ব্যাপারে ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক শিপলু আহমেদ বলেন, ‘খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে সব বাসেই আগুন জ্বলছে। এর মধ্যে কয়েকটি বাস আংশিক পুড়েছে। আগুনের কারণ এখনও জানা যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘কোনো দাহ্য পদার্থ দিয়ে আগুন ধরানো হয়েছে কি না তাও বলতে পারছি না। তদন্ত করে পরে বিস্তারিত তথ্য জানানো যাবে।’
বরকতের স্ত্রী সুরাইয়া পারভীন বলেন, ‘আমার স্বামী মানি লন্ডারিং মামলায় গত বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে আমাদের বাসসহ মোট ৫৫টি গাড়ি আদালতের নির্দেশে জব্দ করে সিআইডি। এর মধ্যে ১২টি বাস ফরিদপুরের গোয়ালচামট বিদুৎ অফিসের সামনে একটি শেডের নিচে রাখা ছিল।’
তিনি বলেন, ‘১৫ থেকে ২০ দিন আগে মিজানুর রহমান চৌধুরী আমাদের গাড়ি রাখার শেড বিক্রি করে দেয়। তারপর সেখান থেকে গাড়িগুলো দূরে অনিরাপদ স্থানে সরিয়ে রাখে। এখন এই আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এতে আমরা কয়েক কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়লাম। এ বিষয় নিয়ে আমরা আদালতের দারস্থ হব।’
এ বিষয়ে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, ‘গভীর রাতে আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। রাত আড়াইটার দিকে আগুন নেভাতে আমরা সক্ষম হই।’
তিনি জানান, ফরিদপুরের সাউথ লাইন নামে পুড়ে যাওয়া ওই বাসগুলো অর্থপাচার মামলায় গ্রেপ্তার শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের মালিকানাধীন। ২০২০ সালের ৭ জুন পুলিশের অভিযানে বরকত-রুবেল গ্রেফতার হওয়ার পর আদালতের নির্দেশে দুদক এসব বাস জব্দ করে। এরপর থেকে সেগুলো এখানেই রাখা ছিল।
২ হাজার কোটি টাকার অর্থপাচার মামলাটিতে বরকত-রুবেলের পাশাপাশি গ্রেপ্তার করা হয়েছে সাবেক মন্ত্রী ও ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছোট ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরকেও।