বিশ্বে ৮০ লাখের বেশি মানুষ গ্লুকোমার কারণে স্থায়ী অন্ধত্বের শিকার। গ্লুকোমা বিষয়ে সচেতনতার অভাবে বিশাল জনগোষ্ঠী অপরিবর্তনযোগ্য অন্ধত্বের শিকার হচ্ছে।
বিশ্ব গ্লুকোমা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর হিকমাহ আই হাসপাতালে শুক্রবার সকালে গ্লুকোমা বিষয়ে সেমিনারে এমন তথ্য জানান বিশেষজ্ঞরা।
সেমিনারে চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এম হাফিজুর রহমান বলেন, গ্লুকোমা চোখের একটি জটিল রোগ। এতে চোখের স্নায়ু ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং দৃষ্টি কমে যায়। একসময় রোগী স্থায়ী অন্ধ হয়ে যায়। এটা অনেকটা চোখের স্নায়ুতে ব্লাড প্রেশারের মতো। এর স্বাভাবিক মাত্রা ১০ থেকে ২১। ২১-এর ওপরে উঠলে তা আশঙ্কাজনক।
মুগদা মেডিক্যাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক, গ্লুকোমা বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন শরিফুল ইসলাম বলেন, চোখের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হলেও অনেক সময় গ্লুকোমার পরীক্ষা করানো হয় না। গ্লুকোমার কারণে ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হয়ে যায়। অনেক সময় চোখের ছানি অপারেশন করলেও গ্লুকোমা পরীক্ষা করে চিকিৎসা নেয়া হয় না। ছানি অপারেশনের পরও অনেকে অন্ধত্ব বরণ করেন।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান বিশ্বে ৮০ লাখের বেশি মানুষ গ্লুকোমার কারণে স্থায়ী অন্ধত্বের শিকার। এদের বেশির ভাগই দক্ষিণ এশিয়ার। গ্লুকোমা সম্পর্কে সচেতনতার অভাবে বিশাল জনগোষ্ঠী অপরিবর্তনযোগ্য অন্ধত্বের শিকার হন। প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করতে পারলে এটি প্রতিরোধ সম্ভব। এ বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শরিফুল ইসলাম জানান, শিশু থেকে বয়স্ক যে কারও গ্লুকোমা রোগ হতে পারে। পারিবারের কারও গ্লুকোমার ইতিহাস থাকলে, চোখে আঘাত পেলে, ক্ষীণদৃষ্টি সমস্যা এবং ডায়াবেটিসের কারণেও গ্লুকোমা হতে পারে।
হিকমাহ আই হাসপাতালের ডেপুটি ম্যানেজার এম এইচ কাউছার শিশির অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
এর আগে বিনা মূল্যে গ্লুকোমা স্ক্রিনিং ক্যাম্প উদ্বোধন করেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আখতার হোসেন।
১২ মার্চ বিশ্ব গ্লুকোমা দিবস। এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো আপনার ‘দৃষ্টি রক্ষা করুন, সুন্দর পৃথিবী উপভোগ করুন’।