প্রেম করে ২০২০ সালের মার্চে জার্মানিতেই বিয়ে করেন বরিশালের রাকিবুল আহসান শুভ ও জার্মান তরুণী আলিসা। কিন্তু জার্মানিতে বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে মিল রেখে বিয়ের অনুষ্ঠান করতে না পারলেও প্রায় দুই বছর পর বাংলাদেশে এসে বাঙালি বধূ হওয়ার স্বাদ পেলেন আলিসা।
শুক্রবার দুপুরে বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের উলালবাটনা গ্রামে আপাদমস্তক বাঙালি বধূর সাজে সেজেছিলেন তিনি। বৌভাত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে বরণ করে নেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। এর আগে গত বুধবার তার গায়ে হলুদেরও আয়োজন করা হয়েছিল।
বৌভাত অনুষ্ঠানে প্রায় দেড় হাজার নিমন্ত্রিত অতিথি ছাড়াও বাঙালি বধূর সাজে জার্মান বধূকে দেখতে ভিড় করেন শত শত মানুষ।
রাকিবুল আহসান শুভ বলেন, ‘২০১২ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সুবাদে আলিসার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হয় আমার। পরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে আলিসা মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করে এবং জার্মানির একটি মসজিদে দুই বছর আগে আমরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হই।’
শুভ জানান, বিয়ের পর থেকে বাংলাদেশে শ্বশুরবাড়িতে আসার আগ্রহ দেখাচ্ছিলেন আলিসা। তার ইচ্ছাতেই ছয় মাস বয়সী সন্তান ও বান্ধবী জেনিফারকে নিয়ে গত শনিবার ঢাকায় আসেন আলিসা ও শুভ। পরে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে বরিশাল যান তারা। সেখান থেকে ঘোড়ার গাড়িতে করে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় আলিসাকে।
বুধবার গায়েহলুদ অনুষ্ঠানে শ্বশুর-শাশুড়ি ও স্বামীর সঙ্গে আলিসা
শুভ বলেন, ‘বুধবার আমার পরিবার গায়েহলুদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল এবং আজ বৌভাতের আয়োজন করেছে। আলিসা এবং আমার সন্তানকে পেয়ে আমার পরিবার অনেক খুশি। আর আলিসাও বেশ আনন্দে আছে এখানে।’
শুভর স্ত্রী আলিসা তেমন বাংলা বলতে না পারলেও বাংলাদেশে এসে দারুণ সময় কাটাচ্ছেন বলে জানান নিউজবাংলার এই প্রতিবেদককে।
শুভর বাবা চরবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শত শত মানুষ আমার পুত্রবধূকে দেখতে ভিড় করছে। আমার পক্ষ থেকে যতটা আনন্দ দেয়া সম্ভব, ততটাই দেয়ার চেষ্টা করছি। বুধবার গায়েহলুদের আয়োজন করেছিলাম। সেদিনই কনসার্ট করেছি, লাঠিখেলা দেখিয়েছি আলিসাকে। দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে আলোকসজ্জা করানো হয়েছে। তোরণ করা হয়েছে বেশ কয়েকটি। পাশপাশি বাড়ির সামনের পুকুরে লাইট দিয়ে ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। আজ বৌভাত অনুষ্ঠানে আলিসাকে বাঙালি বধূর সাজে সাজানো হয়েছে। প্রায় দেড় হাজার মানুষ আজকের বৌভাতে অংশ নিয়ে আমার পুত্রবধূকে দোয়া করেছে। নাতিকে নিয়েই এখন আমাদের সময় কাটছে।’