প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ মামলায় নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহানের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।বৃহস্পতিবার চার্জশিট গ্রহণ করে মেয়রের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছে নীলফামারীর আমলি আদালত।
সিআইডির নীলফামারী পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এ কে এম খন্দকার মুহিবুল নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর নীলফামারীর সৈয়দপুর আমলি আদালতে মেয়র রাফিকা আকতার জাহানের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেন গাউসুল আযম ফারুকী নামে এক ব্যক্তি।
‘প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ মামলার তদন্তে মেয়র রাফিকা আকতার জাহানের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। তার বিরুদ্ধে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছি।’
মামলায় বলা হয়েছে, সৈয়দপুর শহরের বাঙ্গালীপুর নিজপাড়ার গাউসুল আযম ফারুকী ২০১৯ সালে নির্মাণাধীন ছয়তলা ভবনে লিফট স্থাপনের জন্য নতুনভাবে একটি নকশা জমা দেন সৈয়দপুর পৌরসভায়। পৌরসভার তৎকালীন মেয়র ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে ফারুকীর মামলার জেরে নকশাটি অনুমোদন পায়নি।গাউসুল আযম একপর্যায়ে হাইকোর্টের শরণাপন্ন হন। হাইকোর্ট নকশাটি অনুমোদনের আদেশ দেয় মেয়রকে। হাইকোর্টের আদেশের পরও মেয়র নকশা অনুমোদনে সময় ক্ষেপণ করেন।এর মধ্যে ২০২০ সালে সৈয়দপুর পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে মেয়র পদে রাফিকা আকতার জাহান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান।
রাফিকা তখন ফারুকীকে ডেকে জানান, নির্বাচনে তিনি শতভাগ জয়লাভ করবেন। জয়ের পর তিনি নকশাটি অনুমোদন করে দেবেন। হাইকোর্টে যাওয়া লাগবে না।
তিনি নকশা অনুমোদন করে দেয়ার কথা দিয়ে নির্বাচনের আগেই ফারুকীর কাছ থেকে ১ লাখ টাকার চেক নিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেন।মামলায় আরও বলা হয়, মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর রাফিকা নকশা অনুমোদনে টালবাহানা করতে থাকেন। ফারুকীর কাছে মেয়র আরও ১ লাখ টাকা দাবি করেন। এতে রাজি না হওয়ায় ফারুকীকে হয়রানি করতে থাকেন। একপর্যায়ে ফারুকী টাকা ফেরত চাইলে মেয়র টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
একপর্যায়ে নীলফামারীর সৈয়দপুর আমলি আদালতে মেয়র রাফিকা আকতার জাহানের বিরুদ্ধে ফারুকীর করা অর্থ আত্মসাৎ মামলা আদালত গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের আদেশ দেয়।
সিআইডি পরিদর্শক এ কে এম খন্দকার মুহিবুল তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে মেয়রের বিরুদ্ধে ২৮ ফেব্রুয়ারি চার্জশিট দেন।
এ বিষয়ে ফারুকী বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট দপ্তরে রাফিকা আকতার জাহানকে মেয়র পদ থেকে বরখাস্তের জন্য আবেদন করা হবে। প্রয়োজনে হাইকোর্টে যাব।’
সিআইডি কর্মকর্তা মুহিবুল জানান, মামলার তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তিনি মেয়রের বিরুদ্ধে ২৮ ফেব্রুয়ারি চার্জশিট দেন। বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন গ্রহণ করে মেয়রকে হাজিরা হওয়ার সমন জারি করেছে আদালত।
এ বিষয়ে জানতে মেয়র রাফিকা আকতার জাহানের মোবাইল নাম্বারে ফোন করলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।