আগে থেকেই বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জন থেকে দূরে ছিল। করোনা মহামারির ধাক্কায় সেই লক্ষ্য থেকে আরও পিছিয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘বাংলাদেশে এসডিজি বাস্তবায়নে অতিমারি কী প্রভাব ফেলবে?’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ অভিমত দেন বক্তারা। নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) ফেলো ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মালেকা বানু বলেন, অতিমারিতে জেন্ডার বৈষম্য অনেক বেড়েছে এবং সুশাসনের অভাব এই সমস্যাটিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আসন্ন বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে আরও বেশি অর্থ বরাদ্দ দেয়ার প্রস্তাব করেন তিনি।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা আরও বাড়ানোর প্রস্তাব করেন সিপিডির ফেলো ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের কোর গ্রুপের সদস্য অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) নির্বাহী প্রধান অ্যাডভোকেট সাইদা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সাম্প্রতিক বছরে পরিবেশ ও জলবায়ুর জন্য বাজেটে বরাদ্দ অনেক কমেছে। আগামী বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে।
বেসরকারি সংস্থা ওয়াটারএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, ‘করোনা মহামারি মোকাবিলায় নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। দুর্ভাগ্যবশত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ নেই।’
এসডিজির প্রভাবের একটি মধ্যমেয়াদি পর্যালোচনার সুপারিশ করেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন।
গণসাক্ষরতা অভিযানের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অতিমারি চলাকালীন সবচেয়ে দরিদ্র এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা অনলাইন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। করোনার কারণে যেসব শিশু স্কুল থেকে ঝরে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে, তাদের জন্য আগামী বাজেটে বরাদ্দ দিতে হবে।
ঠাকুরগাঁও জেলার হরিজন ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাজু বাশফোর বলেন, ‘হরিজন এবং দলিতদের জন্য কোটা থাকা সত্ত্বেও চাকরি পায় না। তাদের জন্য আলাদা ভাতা নিশ্চিত করা জরুরি।’
সেন্টার ফর সার্ভিসেস অ্যান্ড ইনফরমেশন অন ডিজেবিলিটির (সিএসআইডি) নির্বাহী পরিচালক খন্দকার জহুরুল আলম জানান, অতিমারিতে ৪০ হাজারের বেশি প্রতিবন্ধী শিশু স্কুলে আসা বন্ধ করে দেয়। এদের সবাইকে স্কুলমুখী করতে হবে।
প্রান্তিক জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ড. রুমানা হক।
নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সমন্বয়ক ড. আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী বলেন, ‘আর্থসামাজিক খাতে যেসব দুর্বলতা আছে সেগুলো চিহ্নিত করে সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।’
নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সমন্বয়ক আনিসাতুল ফাতেমা ইউসুফ অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্যে বলেন, ‘করোনা মহামারি বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে আরও পিছনে ঠেলে দিয়েছে এবং এসডিজির অগ্রগতিতে প্রভাব ফেলেছে। তাই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা দেয়া জরুরি হয়েছে উঠেছে।’