দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নাজুক হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
তিনি বলেছেন, ‘অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নেই, সামাজিক নিরাপত্তা নেই, সড়কে বের হলে জীবনের নিরাপত্তা নেই, স্বামী ও সন্তান নিয়ে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হচ্ছেন নারী, ইজ্জতের নিরাপত্তা নেই।
‘নিজের ঘরেও মানুষের নিরাপত্তা নেই। এখন নিজের জমিতে ঘর তুলতেও চাঁদা দিতে হয়। মানুষ জানে না, কার কাছে গেলে কী সমাধান পাওয়া যায়।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অফ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় বর্ধিত সভার উদ্বোধনী আয়োজনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিদিন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে, মানুষের ব্যয় বাড়ছে, কিন্তু আয় বাড়ছে না বলেও মন্তব্য করেছেন সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের।
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলছে। আজ একটির দাম বেশি, কাল অন্যটির দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। প্রতিদিন মানুষের ব্যয় বাড়ছে, কিন্তু আয় বাড়ছে না। প্রতিদিন বেকারের সংখ্যা বাড়ছে, কিন্তু কর্মসংস্থান বাড়ছে না।’
দেশের মানুষের সার্বিক নিরাপত্তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলেও মন্তব্য তার।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়েছে অভিযোগ তুলে জি এম কাদের বলেন, ‘দেশের কোথাও জবাবদিহিতা নেই। পরতে পরতে দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে, প্রতিদিনই দুর্নীতি বাড়ছে। দেখার যেন কেউ নেই। এভাবে চলতে পারে না, দেশের মানুষ এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চায়।’
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানে বিশ্ব দুই ভাগ হয়ে পড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের জন্য অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। যুদ্ধের এই বিরূপ প্রভাবের ঢেউ বাংলাদেশের রাজনীতিতেও লেগেছে। তাই দেশের রাজনীতি কোন পথে যায় নিশ্চিত করে বলা যায় না।’
রাষ্ট্র পরিচালনার অভিজ্ঞতা মাত্র তিনটি দলের রয়েছে জানিয়ে বিরোধীদলীয় উপনেতা বলেন, ‘আগামী দিনের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টির সম্ভাবনা আছে। আর এ জন্যই দলকে সুসংগঠিত করতে হবে। জাতীয় পার্টি সংগঠিত হয়ে গণমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নেতৃত্ব দেবে।’
রওশন এরশাদ সুস্থ আছেন
সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা ও সাবেক ফার্স্ট লেডি রওশন এরশাদ আগের চেয়ে অনেক সুস্থ আছেন বলেও দলের নেতাকর্মীদের জানিয়েছেন জি এম কাদের।
তিনি বলেন, ‘বেগম রওশন এরশাদ এখন অনেকটা সুস্থ। তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হতে না পারলেও আমাদের পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করতে পারবেন।’
জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাবে জানিয়ে কাদের বলেন, ‘যারা জাতীয় পার্টির ঐক্য বিনষ্ট করতে অপচেষ্টা চালাবে তারা কখনই সফল হবে না।’
‘জাতীয় পার্টি কোনো জোটে নেই’
জাতীয় নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু জানালেন, তারা আর কোনো জোটে থাকবেন না।
এ সময় স্বতন্ত্র রাজনীতি নিয়ে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার কথাও জানান তিনি।
চুন্নু বলেন, ‘জাতীয় পার্টি আর কোনো জোটে নেই। আমরা স্বতন্ত্র রাজনীতি নিয়ে এগিয়ে যাব। সব অত্যাচার-নির্যাতন উপেক্ষা করে জাতীয় পার্টি গণমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সক্রিয় থাকবে। ৩০০ আসনেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে চলছে জাতীয় পার্টি।’
বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি, দুঃশাসন আর সরকারি দলের কর্মীদের অত্যাচারে দেশের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। সরকার বলে অনেক উন্নয়ন করেছে। অথচ টাকা দিয়ে টিকিট কিনে মানুষ গণপরিবহনে উঠতে পারে না।’