আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম ক্রমেই কমছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বলেছেন, তার পরও দেশে দাম বাড়ছে। তিনি এমনও দাবি করেছেন, বাংলাদেশ ভারতে গ্যাস রপ্তানি করে।
বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে ছাত্রদলের আয়োজনে দুস্থদের মধ্যে নিত্যপণ্য বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। তবে বিএনপি নেতা কোনো তথ্য-পরিসংখ্যান দেননি।
খাদ্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে এক বছর ধরে সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। এক বছরে লিটারপ্রতি দাম বেড়েছে ৩৪ টাকা। আরও ১২ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব সম্প্রতি সরকার প্রত্যাখ্যান করেছে। এরপর ১ মার্চ থেকে বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক নয়।
পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মিল থেকে চাহিদামতো সরবরাহ পাচ্ছেন না তারা। মিল মালিকরা অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, তারা সরবরাহ করছেন, কিন্তু পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের কারণে সংকট।
তেল আমদানিকারকদের তথ্য বলছে, টনপ্রতি সয়াবিনের আমদানি ব্যয় এখন ১ হাজার ৪০০ ডলার ছাড়িয়েছে, যা এক বছর আগেও ছিল ১ হাজার ডলারের নিচে।
গয়েশ্বর বলেন, ‘বিশ্ববাজারে তেলের দাম ক্রমান্বয়ে কমছে, অথচ আমাদের দেশে তেলের দাম বেড়েই চলেছে।’
ভারতে সরকার গ্যাস রপ্তানি করছে- এমন দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে গ্যাসের অভাব আছে, তার পরও আমরা ভারতে গ্যাস রপ্তানি করছি।’
সারা দেশে অভাব ও দুর্ভিক্ষ চলমান বলেও মনে করেন গয়েশ্বর। বলেন, ‘যারা দিন আনে দিন খায়, তাদের মধ্যে অভাব, কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই, মানুষ আয়ের পথ খুঁজে পাচ্ছে না। দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতি শূন্যের কোটায়।’
সরকারের পতন এখন সময়ের ব্যাপার বলেও মনে করেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘ভোটাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় একমাত্র পথ, এই সরকারের পতন। পরিবর্তিত বিশ্বে বাংলাদেশের পরিবর্তন অনিবার্য, পরিবর্তন ঘটবেই।’
নেতাকর্মীদের রাজপথে অটল থাকার পরামর্শও দেন গয়েশ্বর। বলেন, ‘আমরা যেন রাস্তায় দাঁড়িয়ে আর মার না খাই, সে জন্য আমাদের চোখ-মুখের ভাষা প্রস্তুত রাখতে হবে। যেহেতু পেছনে যাওয়ার জায়গা নেই, সেহেতু পেছনে যাওয়ার সুযোগ থাকে না। তাই মাত্র একটি কাজ সেটি হচ্ছে সামনে অগ্রসর হওয়া। কারণ সামনে যাওয়ার সুযোগ আছে।
‘আমরা যদি সাহস নিয়ে ওদের সামনে দাঁড়াই, তখন গুলি করার সাহস পাবে না। প্রতিরোধ যা করার করেছে, আর কোনো প্রতিরোধ করার ক্ষমতা ওদের নেই।’
ছাত্রদল সভাপতি ফজলুর রহমান খোকনের সভাপতিত্বে আয়োজনে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, সদস্য সচিব আমিনুল হক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম।