করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
আগামী এপ্রিল মাসে সহকারী শিক্ষক পদের এ নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আর জুলাই মাসে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের চূড়ান্ত নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বুধবার দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন।
সভায় জানানো হয়, সহকারী শিক্ষকের ৩২ হাজার ৫৭৭টি শূন্য পদে নিয়োগের পরীক্ষা করোনা মহামারির বাস্তবতায় গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। ইতোমধ্যে অবসরজনিত কারণে আরও ১০ হাজারেরও বেশি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য হয়ে পড়েছে। এতে করে বিদ্যালয়ে শিক্ষক ঘাটতি দেখা দিয়েছে; যা পাঠদান কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে। এ সমস্যা সমাধানে মন্ত্রণালয় পূর্বের বিজ্ঞপ্তির শূন্য পদ ও বিজ্ঞপ্তির পরের শূন্য পদ মিলিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সভায় মন্ত্রণালয়ের সচিব আমিনুল ইসলাম খান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মোহাম্মদ মনসুরুল আলম, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবু বকর সিদ্দিক, রুহুল আমিন ও মোশাররফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘জাতির উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে শিক্ষার বিকল্প নেই, এবং প্রাথমিক শিক্ষা জাতির ভিত নির্মাণ করে, তাই সরকার মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণে অঙ্গীকারবদ্ধ। এ লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
এর আগে গত বছরের ৯ আগস্ট প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেছিলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে সহকারী শিক্ষক পদের নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে নিয়োগসংক্রান্ত টেকনিক্যাল কাজ অনেকটা শেষ করেছি। পরীক্ষার বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সঙ্গে চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছে এবং সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের কাজ শেষ।’
২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক পদে সাড়ে ৩২ হাজার জনকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে প্রাক-প্রাথমিকে ২৫ হাজার ৬৩০টি এবং প্রাথমিকে ৬ হাজার ৯৪৭টি শূন্য পদের কথা উল্লেখ রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সহকারী শিক্ষক পদে জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫-এর ১৩তম গ্রেডে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয়া হবে। এই গ্রেড অনুযায়ী শিক্ষকদের বেতন হবে ১১০০০-২৬৫৯০ টাকা।
নিয়ম অনুযায়ী প্রার্থীদের বয়স বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দিন থেকে সর্বনিম্ন ২১ বছর এবং করোনার কারণে সাধারণ ছুটি শুরুর তারিখ অর্থাৎ চলতি বছরের ২৫ মার্চ পর্যন্ত যাদের বয়স সর্বোচ্চ ৩০ বছর, তারা আবেদন করতে পারবেন। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে এ বয়সসীমা হবে ৩২ বছর।