বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বড় লাফের সুযোগ নিল বিনিয়োগকারীরা

  •    
  • ১০ মার্চ, ২০২২ ১৫:০১

সকাল ১০টায় লেনদেনের শুরুই হয় ২৮ পয়েন্ট বেড়ে। বেলা ১০টা ৪১ মিনিটে সূচক আগের দিনের তুলনায় বাড়ে ১১০ পয়েন্ট। তখন আগের দিন ১৫৫ পয়েন্টকে ছাড়িয়ে যাবে কি না, তা নিয়েও কথা উঠে। তবে শেষ পর্যন্ত ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে শেষ হয় লেনদেন। এ নিয়ে তিন দিনে সূচক বাড়ল ২১১ পয়েন্ট। এই উত্থানের আগের আট দিনে হারিয়েছিল ৩৮২ পয়েন্ট।

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর আট কর্মদিবসে ব্যাপক দরপতন শেষে দুই টানা তিন দিন বাড়ল সূচক। এর মধ্যে দ্বিতীয় দিন বড় উত্থানের পর দিন সূচক আবার একশ পয়েন্ট বেড়ে গিয়েও সেখান থেকে কমে যায়।

বুধবার এক দিনে ৩৬৫টি কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছিল। আর সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার বাড়ে ১৯৩টির দর, হারায় ১৪৭টির, যেগুলোর মধ্যে একটির দর আগের দিনই কমেছিল।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, মঙ্গলবার শেষ বেলায় উত্থানের আগে বা তার আগের দিন যারা শেয়ার কিনেছিলেন, তারা তৃতীয় কর্মদিবসে এসে মুনাফা করতে পেরেছেন। তাই শেয়ার ছেড়ে দেয়ার প্রবণতা ছিল। এ কারণেই সকালে বেড়ে গিয়েও বেলা শেষে কমে যায় দাম।

শেয়ার কেনায় আগ্রহ যে কিছুটা ফিরেছে, সেটি লেনদেনে স্পষ্ট। নয় কর্মদিবস পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন এক হাজার কোটি টাকা ছাড়াল।

দিন শেষে হাতবদল হয়েছে এক হাজার ৬১ কোটি ২০ লাখ ৬৬ হাজার টাকার শেয়ার, যা আগের দিন ছিল ৭৭৩ কোটি ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

এর আগে শেষ এক হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের দিন। সেদিন দরপতন হলেও লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৫০ কোটি ২৮ লাখ ৩ হাজার টাকা।

সকাল ১০টায় লেনদেনের শুরুই হয় ২৮ পয়েন্ট বেড়ে। বেলা ১০টা ৪১ মিনিটে সূচক আগের দিনের তুলনায় বাড়ে ১১০ পয়েন্ট। তখন আগের দিন ১৫৫ পয়েন্টকে ছাড়িয়ে যাবে কি না, তা নিয়েও কথা উঠে।

সে সময় হাতে গোনা কিছু কোম্পানি ছাড়া বেশিরভাগই দাম বেড়ে লেনদেন হচ্ছিল। কিন্তু সেখান থেকে দেড় ঘণ্টারও কম সময়ে ৯৭ পয়েন্ট হারায় সূচক। মূলত সে সময়েই দেখা দেয় বিক্রয় চাপ।

বেলা সাড়ে ১২টা থেকে আবার কিছুটা বেড়ে শেষ পর্যন্ত সূচক দাঁড়ায় ৬ হাজার ৬৬৮ পয়েন্টে, যা আগের দিনের তুলনায় ৩৮ পয়েন্ট বেশি।

এ নিয়ে তিন দিনে সূচক বাড়ল ২১১ পয়েন্ট। এই উত্থানের আগের আট দিনে হারিয়েছিল ৩৮২ পয়েন্ট।

পুঁজিবাজারে তিন দিনের এই উত্থানের পেছনে কাজ করেছে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত। বাজারে ধসের পরিস্থিতিতে পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিলের এক শ কোটি টাকা দ্রুত বিনিয়োগের আদেশ এসেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির পক্ষ থেকে। সেই সঙ্গে এক দিনে কোনো কোম্পানির শেয়ারের দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ২ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার লেনদেন শুরুর এক ঘণ্টায় সূচক ১১০ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হতে থাকলেও শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে কিছুটা কমে

মঙ্গলবার এই দুটি সিদ্ধান্ত নেয়ার পর বাজারে তারল্য বাড়াতে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বসে বিএসইসি। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, ব্যাংকগুলো বাজারে বিনিয়োগ বাড়াবে। যেসব ব্যাংকের মূলধনের ২৫ শতাংশের কম বিনিয়োগ আছে, তারা আরও ২ শতাংশ বিনিয়োগ বাড়াবে।

আবার ২০২১ সালে বাজারে তারল্য বাড়াতে ব্যাংকগুলোকে বিশেষ তহবিল করার যে সুযোগ দেয়া হয়, সেই তহবিলে যারা টাকা দেয়নি, সেই ব্যাংকগুলো টাকা দেবে, আবার যারা টাকা জমা দিলেও বিনিয়োগে যায়নি, তারা বিনিয়োগে যাবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।

অবশ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার সাবেক চেয়ারম্যান এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম মনে করেন, এভাবে ‘কিছু একটা করে’ পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফেরানো যাবে না। তিনি নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়, কারসাজির বিরুদ্ধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা, যেনতেন কোম্পানির আইপিও না দেয়া, ভালো কোম্পানি নিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছেন।

সূচক বাড়াল ব্যাংক, বিমা, বস্ত্র

ব্যাংক খাতের ৩৩টি কোম্পানির মধ্যে ২৫টি, সাধারণ বিমা খাতের ৪০টি কোম্পানির মধ্যে ৩৯টি, এবং বস্ত্র খাতের ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে ৩৯টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।

সবচেয়ে বেশি দাম বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানির মধ্যে চারটি ছিল বস্ত্র খাতের। অন্যদিকে সূচকে সবচেয়ে বেশি সূচক বাড়িয়েছে যে ১০টি কোম্পানি, তার মধ্যে তিনটি ছিল ব্যাংক খাতের।

তবে সূচক বাড়াতে প্রধান ভূমিকায় ছিল ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো। কোম্পানিটির শেয়ারদর ০.৯২ শতাংশ বাড়ার কারণে সূচকে যোগ হয়েছে ৭.২৫ পয়েন্ট।

গ্রামীণফোন সূচকে যোগ করেছে ৫.৮১ পয়েন্ট। কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ০.৫৩ শতাংশ।

অন্যদিকে বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারদর ১.৩৩ শতাংশ বাড়ার কারণে সূচকে যোগ হয়েছে ৪.৪৪ পয়েন্ট।

এছাড়া ইউনাইটেড পাওয়ার ৪.৪ পয়েন্ট, বিকন ফার্মা ২.৭৫ পয়েন্ট, ডাচ বাংলা ব্যাংক ২.২৪ পয়েন্ট, আইএফআইসি ব্যাংক ২.১৫ পয়েন্ট, স্কয়ার ফার্মা ২.০২ পয়েন্ট, ইউনিয়ন ব্যাংক ১.৭৫ পয়েন্ট এবং শাহজিবাজার পাওয়ার সূচকে যোগ করেছে ১.৬২ পয়েন্ট।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানিই সূচকে যোগ করেছে ৩৪.৪৩ পয়েন্ট।

অন্যদিকে সূচক সবচেয়ে বেশি ১৩.৫০ পয়েন্ট কমেছে ওয়ালটনের শেয়ারের ১.৬০ পয়েন্ট দরপতনের কারণে।

রেনাটার দাম ০.৮৪ শতাংশ কমায় সূচক কমেছে ৩.০৪ পয়েন্ট, বার্জার পেইন্টসের দর ১.০৪ পয়েন্ট কমায় সূচক কমেছে ২.১৩ পয়েন্ট।

এছাড়া তিতাস গ্যাসের কারণে ১.৭৫ পয়েন্ট, রবির কারণে ১.৩৩ পয়েন্ট, লিনডে বিডির কারণে ১.২৩ পয়েন্ট, ম্যারিকোর কারণে ১.১২ পয়েন্ট, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির কারণে ১.১২ পয়েন্ট, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের কারণে ০.৮৮ পয়েন্ট এবং ট্রাস্ট ব্যাংকের কারণে ০.৭২ পয়েন্ট সূচক কমেছে।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানির কারণে সূচক কমেছে ২৭ পয়েন্ট।

দর বৃদ্ধির সেরা ১০

দিনের দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ছুয়েছে চারটি কোম্পানি। এগুলো হলো বিডিকম, মেঘনা মিল্ক, অগ্নি সিস্টেমস ও ভিএসএফ থ্রেড। এগুলোর দর বেড়েছে প্রায় ১০ শতাংশ।

এছাড়া কাশেম ড্রাইসেল ও কুইনসাউথের দর বেড়েছে ৮ শতাংশের বেশি।

ইয়াকিন পলিমার, ইনটেন অনলাইন, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ও ঢাকা ডায়িংয়ের দর বেড়েছে ৭ শতাংশের বেশি।

এছাড়া ৬ শতাংশের বেশি বেড়েছে একটির দর, ৫ শতাংশের বেশি ১০টির, ৪ শতাংশের বেশি বেড়েছে ১২টি কোম্পানির।

দরপতনের সেরা ১০

বিএসইসির নতুন নীতিমালা অনুযায়ী ২ শতাংশের বেশি দরপতন সম্ভব নয় এক দিনে। এই নীতিমালা গ্রহণের প্রথম দিন ব্যাপক উত্থান হলেও দ্বিতীয় দিন ২৭টি কোম্পানির দর দুই শতাংশের আশেপাশে ছিল।

দরপতনের এই তালিকার শীর্ষে ছির ন্যাশনাল টি কোম্পানি, দ্বিতীয় অবস্থানে জেমিনি সি ফুড।

লিবরা ইনফিউশন, তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, বিডি ল্যাপস, এএমসিএল প্রাণ, লিনডে বিডি, এপেক্স ফুড, জুট স্পিনার্স ও রেনউইক যগেশ্বর ছিল দর পতনের শীর্ষ তালিকায়।

এ বিভাগের আরো খবর