৪৫ বছর নির্বিবাদে ব্যবসা চললেও ফেসবুকে ভুয়া ছবি ভাইরাল হওয়ার পর প্রশাসন বন্ধ করে দিয়েছে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের দেশি মদের দোকানটি।
দোকানটির সাইনবোর্ড খুলে নেয়ার পাশাপাশি ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করছে প্রশাসন।
নিউজবাংলাকে বুধবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, ‘জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে দোকানটি এক মাসের জন্য সিলগালা করা হয়েছে। এ ছাড়া দোকানের লাইসেন্স বাতিলের জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে চিঠি দেয়া হয়েছে। দোকানটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হবে।’
প্রশাসনিক কর্মকর্তারা জানান, দেশি মদ বিক্রির জন্য ১৯৭৭ সালে দোকানটি চালু হয়। এর মালিক সারোয়ার জাহান। তবে ম্যানেজারের মাধ্যমেই দোকানটিতে মদের বেচাকেনা চলছিল। গত বছরের ৩০ জুন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য দোকানটির লাইসেন্স নবায়ন করা হয়। মদ বিক্রির জন্য জেলায় এ রকম পাঁচটি দোকান আছে।
কর্মকর্তারা দাবি করেন, হালুয়াঘাটের দোকানটিতে মদ বিক্রির পাশাপাশি নানা অসামাজিক কাজের অভিযোগ আছে। লাইসেন্স ছাড়াও সেখানে মদ বিক্রি হয়। সেখানে মাদকসেবীদের নিয়মিত আড্ডা এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছিল। স্থানীয়দের নানা অভিযোগের সত্যতা পেয়েই দোকান সিলগালা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মদের দোকানের সাইনবোর্ডটি এখন থানায়। ছবি: নিউজবাংলা
হালুয়াঘাটের নালিতাবাড়ী রোড এলাকার মদের দোকানটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয় সাইনবোর্ডের কারণে। দোকানটির সাইনবোর্ডের ছবি ফটোশপে এডিট করে বিকৃতভাবে তা প্রচার করা হয়।
ভাইরাল হওয়া ছবিতে সাইনবোর্ডের মাঝামাঝি জায়গায় ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। সাইনবোর্ডের ওপরের দিকে বাম পাশে আওয়ামী লীগের লোগো। ডান দিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সজীব ওয়াজেদ জয়ের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর আরেকটি ছবি বসানো ছিল, যা অনেক স্থানে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ডে ব্যবহার করা হয়।
মদের দোকানে প্রধানমন্ত্রীর ছবিসহ সাইনবোর্ড নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়া হয়। ফেসবুকে ব্যাপকভাবে প্রচার পাওয়া ছবিটি নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করছেন অনেকে। প্রকৃত ঘটনা যাচাই করে নিউজবাংলা। অনুসন্ধানে ছবিটি ফেক বলে প্রমাণ মেলে।
ছবি কারসাজির মাধ্যমে আলোচনায় আসা মদের দোকানটির সাইনবোর্ড মঙ্গলবার দুপুরেই খুলে ফেলে প্রশাসন। এরপর তা রাখা হয়েছে থানায়।
হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনুজ্জামান খান বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত চলছে। যে বা যারাই প্রধানমন্ত্রীর ছবি এডিট করে সাইনবোর্ডে বসিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।’