রেল লাইনজুড়ে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। এখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মাংসপিণ্ড। তার পাশেই দুটি ব্যাগ। ব্যাগে রাখা বইগুলোও আছে। শুধু নেই এই যারা এই ব্যাগগুলো কাঁধে নিয়ে স্কুলে যেত।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মহানগর প্রভাতির নীচে কাটা পড়ে মারা যায় পঞ্চম শ্রেনীর তিন ছাত্রী। তারা হলেন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের মোসাম্মৎ মীম, রীমা আক্তার ও তাসপিয়া আক্তার তন্বী। পড়ে থাকা ব্যাগগুলো তাদেরই।
সদর দক্ষিণ উপজেলার বিজয়পুর এলাকায় এমন হৃদয় বিদারক দৃশ্য দেখে আফসোস করছিলেন অনেকেই। চোখের কোনে অশ্রু লুকানোর চেষ্টা করছিলেন কেউ কেউ।
পরে ব্যাগগুলো উদ্ধার করে নেয়া হয় নিহতদের বাড়িতে। স্বজনরা দৌড়ে এসে ব্যাগগুলো এমনভাবে বুকে জড়িয়ে ধরেন, যেন তাদের মেয়েই ফিরে এসেছে।
নিহত রিমা আক্তারের বাবা রিপন মিয়া মেয়ের স্কুল ব্যাগটি বুকে চেপে ধরে বলেন, ‘মাইয়া স্কুলে যাওনের সময় কান্দো কইরা ব্যাগডা লইয়া গেছে। যাওনের সময় কয়, আব্বা আমি ইস্কুলে যাইতাছি। আমারে দশ টাকা দাও। আমি টাকা দিছি। এট্টু পরে হুনি আমার মাইয়া মইরা গেছে।’
কথাগুলো বলতে বলতে মেয়ের ব্যাগ বুকে নিয়ে বিলাপ করতে থাকেন রিপন মিয়া। কোন স্বান্তনাই তার মনকে শান্ত করতে পারছে না।