বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লিবিয়ায় জিম্মি মাদারীপুরের ৯ যুবক

  •    
  • ৯ মার্চ, ২০২২ ১৭:০১

ইতালির উদ্দেশ্যে পাড়ি জমানো আকতার শেখের বাবা সুলতান খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার ছেলেকে জিম্মি করে ৯ লাখ টাকা দাবি করছে। এখন আমি এতো টাকা কোথায় পাবো? যে দালালের মাধ্যমে লিবিয়ায় পাঠিয়েছি, তাকেও পাওয়া যাচ্ছে না। এখন আমার ছেলেকে ফেরত আনার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই। আমার ছেলেকে ফেরত চাই।’

দেড় মাস আগে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে লিবিয়ায় পাড়ি জমান মাদারীপুরের ৯ যুবক। লিবিয়ায় পৌঁছালেও এরপর থেকে তাদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ পরিবারের।

তাদের স্বজনরা জানান, লিবিয়ায় ওই যুবকদের জিম্মি করে বাড়িতে ভিডিও কল দিয়ে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে। টাকা না দিলে তাদের নির্যাতনের হুমকি দিয়েছে জিম্মিকারীরা।

এসব পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, মুক্তিপণের টাকা দেয়ার সাধ্য তাদের কারও নেই। এ অবস্থায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা। সন্তানদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আকুতি জানিয়েছেন তারা।

পুলিশ বলছে, মামলা করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ওই ৯ যুবক হলেন মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার পশ্চিম বালিগ্রাম গ্রামের মকবুল শেখের ছেলে সাকিব শেখ, জিনু আকনের ছেলে শওকত আকন, সুলতান খানের ছেলে আকতার শেখ, সাহাবুদ্দিন মাতুব্বরের ছেলে সোহাগ মাতুব্বর, সিরাজ শেখের ছেলে পারভেজ শেখ, সামছুল হক মাতুব্বরের ছেলে হাসান মাতুব্বর, বেল্লাল মোল্লার ছেলে পারভেজ মোল্লা, সিরাজ মোল্লার ছেলে মেহেদী মোল্লা ও বোরহান চৌকিদারের ছেলে রিয়াজ চৌকিদার।

তাদের বয়স ১৯ থেকে ২১ বছরের মধ্যে।

পরিবারগুলো জানায়, ইতালি যেতে ডাসার উপজেলার পশ্চিম বালিগ্রাম গ্রামের লিবিয়া প্রবাসী জামাল সরদারের সঙ্গে কথা হয় তাদের। জামালের কথামতো তারা রাজৈর উপজেলার বদরপাশা গ্রামের মিলন মিয়া নামের আরেক দালালের সঙ্গে কথা বলেন।

আলোচনায় ঠিক হয়, তাদের লিবিয়া হয়ে ইতালি নিয়ে যাওয়া হবে। জনপ্রতি সাড়ে ৯ লাখ টাকা করে চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, মিলনের কাছে সাড়ে ৯ লাখ টাকা করে পরিশোধ করে ওই ৯ যুবকের পরিবার।

এরপর লিবিয়ার উদ্দেশ্যে তারা দেশ ছাড়েন দেড় মাস আগে। এরই মধ্যে তারা লিবিয়ায় গিয়ে পৌঁছায়। সেখান থেকে গত ৩ মার্চ ইটালি যেতে সাগর পাড়ি দেয়ার কথা বলে নিয়ে তাদের জিম্মি করা হয়।

পরিবারের সদস্যদের দাবি, এরপর প্রত্যেক যুবকের পরিবারের কাছে তাদের সন্তানদের দিয়ে ভিডিও কল করিয়ে ৯ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।

ইতালির উদ্দেশ্যে পাড়ি জমানো আকতার শেখের বাবা সুলতান খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার ছেলেকে জিম্মি করে ৯ লাখ টাকা দাবি করছে। এখন আমি এতো টাকা কোথায় পাবো? যে দালালের মাধ্যমে লিবিয়ায় পাঠিয়েছি, তাকেও পাওয়া যাচ্ছে না।

‘এখন আমার ছেলেকে ফেরত আনার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই। আমার ছেলেকে ফেরত চাই।’

পারভেজ শেখের বাবা সিরাজ শেখ বলেন, ‘ধার-দেনা করে পোলারে বিদেশ পাঠাইলাম। এখন আর টাকা দেয়ার মতো সাধ্য আমার নেই। দালালের ধর্না দিয়েও কোনো কাজে আসছে না।

‘কীভাবে আমার সন্তানকে পাব? সরকারের কাছে সহযোগিতা চাই, আমি আমার পোলা ফেরত চাই।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে বালিগ্রামের লিবিয়া প্রবাসী জামাল সরদারের ইমু ও হোটাসআপে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। মেসেজ দিয়েও তার সাড়া মেলেনি।

তার গ্রামের বাড়িতে যোগাযোগ করলে, কেউ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। অপরদিকে রাজৈর উপজেলার বদরপাশা গ্রামের মিলন মিয়াকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানান, তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন।

ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসানুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভুক্তভোগী পরিবারগুলো বিভিন্ন স্থানে বসে দালালদের সঙ্গে লেনদেন করেছে। যা আমার থানা এলাকার বাইরে।

মানবপাচার মামলাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পরিবার মানবপাচার মামলা করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযুক্তদের খুঁজে বের করা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর