বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) নিবন্ধন সনদধারীদের গণবিজ্ঞপ্তিতে নয়, প্যানেলভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে অনশন পালন করছেন প্যানেলপ্রত্যাশীরা।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বুধবার ‘প্যানেলপ্রত্যাশী নিবন্ধন শিক্ষক’ নামের সংগঠনের ব্যানারে এই কর্মসূচি শুরু হয়।
কর্মসূচিতে প্যানেলপ্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি মো. আমির হোসেন বলেন, ‘এনটিআরসিএ বিভিন্ন সময়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ফরম পূরণের উদ্দেশ্যে হাজার হাজার চাকরিপ্রত্যাশীর কাছ থেকে অর্থ নিচ্ছে। অথচ নানা অজুহাতে তাদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না, যা প্রতারণার শামিল।
‘আমরা সরকারের কাছে এ প্রতারণা বন্ধ করার জোর দাবি জানাই। একই সঙ্গে গণবিজ্ঞপ্তি নয়, যেসব শিক্ষক তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করেও চাকরি পাননি, তাদের প্যানেল করে নিয়োগের দাবি জানাই।’
তিনি বলেন, ‘দাবি আদায়ে যা যা করা দরকার, সবই করব। আমরা মাঠে আছি, মাঠে থাকব।’
কর্মসূচিতে একাধিক বক্তা বলেন, শিক্ষক নিবন্ধন সনদ চাকরির সনদ, একাডেমিক সনদ নয়। শিক্ষকতা ছাড়া এ সনদ কোনও কাজে আসবে না। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে অর্জিত শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতার সনদ হলো শিক্ষক নিবন্ধন সনদ। তাই সনদ যার, চাকরি তার।
তারা আরও বলেন, সরকারের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখতে প্যানেলভিত্তিক নিয়োগের ব্যবস্থা নিয়ে শিক্ষক সমাজকে অভিশাপমুক্ত করতে কার্যকর ব্যবস্থা সময়ের দাবি।
অনশনকালে প্যানেলপ্রত্যাশীরা দাবি করেন, সব নিবন্ধনধারীর নীতিমালায় নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত নিবন্ধন পরীক্ষা বন্ধ রাখতে হবে। একই সঙ্গে ইনডেক্সধারীদের গণবিজ্ঞপ্তির অন্তর্ভুক্ত না করে আলাদা বদলির ব্যবস্থা করতে হবে।
এর আগে গত ২০ জানুয়ারি তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করা ৩৪ হাজার ৭৩ শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করে এনটিআরসিএ। এরপর আরেক দফায় গত ১ মার্চ আরও ১১৬ শিক্ষককে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়।
গত বছরের ৩০ মার্চ তৃতীয় ধাপে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ৫৪ হাজার ৩০৪ জন শিক্ষক নিয়োগে তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ।
গণবিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ৫৪ হাজার ৩০৪টি শূন্যপদের মধ্যে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে ৩১ হাজার ১০১টি পদ রয়েছে। এর মধ্যে এমপিওভুক্ত পদ ২৬ হাজার ৮৩৮টি। মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে শূন্য পদ ২০ হাজার ৯৯৬টি।
এর মধ্যে ১৯ হাজার ১৫৪টি এমপিওভুক্ত। আর ২ হাজার ২০৭টি এমপিও পদ রিট মামলায় অংশ নেয়াদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়।
৫১ হাজার ৭৬১টি পদে সুপারিশ করার কথা থাকলেও গত বছরের ১৫ জুলাই সুপারিশ করা হয়েছে ৩৮ হাজার ২৮৬ জন প্রার্থীকে। তাদের মধ্যে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে ৩৪ হাজার ৬১০ জন এবং ননএমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে ৩ হাজার ৬৭৬ জনকে সুপারিশ করা হয়।
৮ হাজার ৪৪৮টি পদে কোনো আবেদন না পাওয়ায় এবং ৬ হাজার ৭৭৭টি নারী কোটায় প্রার্থী না পাওয়ায় ১৫ হাজার ৩২৫টি পদে ফল দেয়নি এনটিআরসিএ।