বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সেই ফোনালাপ আমার নয়: এমপি জলি

  •    
  • ৮ মার্চ, ২০২২ ২১:৪৮

এমপি জলি বলেন, ‘আমাকে জড়িয়ে একটি অডিও এবং সংবাদ অনলাইনে প্রকাশ হয়েছে এবং ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি দেখে হতভম্ব হয়েছি, কারণ এটা আমার নয়। নারী দিবসে একজন মহিলা সাংসদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেখছি।’

মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে থাপ্পড় দিয়ে এলাকাছাড়া করার হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পাবনার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি।

তিনি জানান, যে ফোনালাপের রেকর্ডিংয়ের ভিত্তিতে এই অভিযোগ সামনে আনা হয়েছে সেটি তার নয়।

পাবনা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টায় তিনি এই সংবাদ সম্মেলন ডাকেন। সেখানে তিনি জানান, ওই নারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন।

পাবনা-সিরাজগঞ্জ সংরক্ষিত আসনের এমপি নাদিরা ইয়াসমিন জলি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রীও।

মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে জলির বিরুদ্ধে হুমকি-ধমকির অভিযোগ তোলেন জেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা কানিজ আইরিন জাহান।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে এমপি জলি বলেন, ‘আমাকে জড়িয়ে একটি অডিও এবং সংবাদ অনলাইনে প্রকাশ হয়েছে এবং ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি দেখে হতভম্ব হয়েছি, কারণ এটা আমার নয়। নারী দিবসে একজন মহিলা সাংসদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেখছি। খুবই কষ্ট পেয়েছি। কারণ আমি সার্বক্ষণিক নারীদের নিয়েই থাকি। নারীদের অধিকার নিয়ে কাজ করি।

‘গতকাল সোমবার ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের নানা অনুষ্ঠান নিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যস্ত ছিলাম। তাহলে আমি তাকে কখন ফোন দিয়ে হুমকি দিলাম? বিষয়টি আমার বুঝে আসছে না। একজন দুর্নীতিবাজ নারীর এমন অভিযোগে আমি অত্যন্ত মর্মাহত ও ব্যথিত।’

কানিজ আইরিনকে দুর্নীতিবাজ অ্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘তিনি পুরো জেলাজুড়ে বিভিন্ন নারীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। পরিদর্শকের নামে তিনি চাঁদা উত্তোলন করেন। অনেক ভালো ভালো এনজিও তিনি বাতিল করে দিয়েছেন। সেসব বিষয়ে আমরা প্রশ্ন করলে তিনি জানান কাগজপত্র ঠিক নেই। তাহলে শুরুতে কেন তাদের এনজিও অনুমোদন দেয়া হয়?’

ফোন রেকর্ডের কথা অস্বীকার করে এমপি বলেন, ‘আমি ওই নারী কর্মকর্তাকে ফোন দিয়েছিলাম, কিন্তু আমার ফোন উনি রিসিভ করেননি। সামাজিক মাধ্যমে যেটি ভাইরাল হয়েছে, সেই ফোন নম্বরটিও আমার নয়, কণ্ঠও আমার নয়। সফটওয়্যার দিয়ে অডিও বানিয়ে আমার নামে চালিয়ে দেয়া হয়েছে।’

কানিজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে এমপি জলি বলেন, ‘ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এর আগের সাবেক জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদও তার বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। খুব শিগগিরই তার বিরুদ্ধে তদন্ত হবে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।’

এমপি আরও জানান, মিথ্যা ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় তিনি কানিজের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন।

যা ঘটেছিল

জেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা কানিজ বলেন, ‘নারী দিবস উপলক্ষে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে অনুষ্ঠানে সংরক্ষিত আসনের মহিলা সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলিকে প্রধান অতিথি করা হয়েছিল। দাপ্তরিক ব্যস্ততার কারণে আমন্ত্রণপত্র দিতে একটু দেরি হয়।’

‘গতকাল (সোমবার) বেলা ১১টায় সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শামসুন্নাহার রেখা আমাকে ফোন করে সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন কেন চিঠি পাননি এর কারণ জানতে চান। আমি তাকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে বলে জানাই।’

হুমকির অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এ সময় সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি ফোন নিয়ে আমাকে গালিগালাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে আমাকে থাপ্পড় দিয়ে পাবনা ছাড়া করবেন বলে ধমক দেন। আমাকে দুর্নীতিবাজ বলে গালি দিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে পাবনা থেকে তাড়াতে পারেন বলেও হুমকি দেন তিনি।’

ভাইরাল হওয়া অডিও রেকর্ডে শোনা যায়, প্রথমে ভাইস চেয়ারম্যান শামসুন্নাহার রেখা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে মহিলা এমপিকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি জানতে চান। মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানালে বাসায় কেন লোক পাঠানো হয়নি বা ফোন করা হয়নি তা জানতে চান।

একপর্যায়ে নাদিরা ইয়াসমিন জলি এমপি ফোন কেড়ে নিয়ে বলেন, ‘এই, আপনি কী হয়েছেন? আপনি নারী হয়ে নারীদের সম্মান করেন না। আপনাকে এক থাপ্পড় মেরে পাবনা ছাড়া করব কিন্তু, বেশি স্পর্ধা হয়েছে। সবকিছু কি আপনার লিজ দেয়া হয়েছে?’

এ সময় তাকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘মেয়েদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন, আপনাকে কী করে পাবনা ছাড়া করতে হয় তার ব্যবস্থা আমি করছি। আপনাকে পাবনা ছাড়া করা মাত্র দশ মিনিটের বিষয়...’ বলে গালিগালাজ করতে থাকেন।

এ ঘটনায় কানিজ ফাতেমা বলেন, ‘আমার কাজে অনিয়ম, ভুল-ত্রুটি পেলে তিনি বকা দিতে পারেন, প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করতে পারেন। কিন্তু থাপ্পড় দেয়ার কথা বলতে পারেন না।’

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার বাবা-মাও কখনো আমাকে থাপ্পড় দেননি। অথচ নারী দিবসে আমাকে এমন একটি পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হলো। আমি এখানে সরকারের দায়িত্ব পালন করতে এসেছি, নারী দিবসের দিনে থাপ্পড় খেতে নয়। ঘটনার পর থেকে আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছি।’

এ বিষয়ে নারী দিবসের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করা পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (স্থানীয় সরকার) মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।’

এ বিভাগের আরো খবর