‘নারী মানেই যোদ্ধা। তাদের যুদ্ধ করেই সামনে এগোতে হবে। দেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে, নিজেকে টিকিয়ে রাখতে নারী উদ্যোক্তাদের প্রতিনিয়িত যোদ্ধার ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হয়।’
কথাগুলো বলছিলেন ট্রিম টেক্স বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শাহেদা পারভীন।
এদিকে নারী উদ্যোক্তা হতে হলে হোমওয়ার্কের গুরুত্ব অপরিসীম বলে মনে করেন লেজার মেডিক্যালের স্বত্বাধিকারী ঝুমু খান। বলেন, ‘হোমওয়ার্ক থাকলে অনেকদূর এগোনো যায়।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড (এসএফআইএল) নিবেদিত ‘বিকশিত নারী’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন এই দুই নারী উদ্যোক্তা।
অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে অনলাইন সংবাদমাধ্যম নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকমের সহ-সম্পাদক নুসরাত জাবীন বিভা।
২০০৪ সাল থেকে উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করেন লেজার মেডিক্যালের স্বত্বাধিকারী ডাক্তার ঝুমু খান। তিনি বলেন, ‘শুরুতে উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিবন্ধকতা ছিল। ডাক্তার হিসেবে ব্যাংক থেকে লোন পাওয়াও কঠিন ছিল। সেই চ্যালেঞ্জ উতরে গেছি।
‘এখন চর্ম রোগের চিকিৎসার একটা নতুন ধারা সৃষ্টি করেছি। আমাদের পথ ধরে আরও অনেক প্রতিষ্ঠান চিকিৎসা শুরু করেছে। দেশে চর্ম রোগের চিকিৎসা এখন আন্তর্জাতিক মানের। সাফল্যের সঙ্গে এই চিকিৎসা করা হচ্ছে। সবাই একটা প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে এই সেবাগুলো দিচ্ছি।’
নারীদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য কারিগরি শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দেন তিনি। বলেন, ‘এগুলোই তাকে স্বাবলম্বী করবে।’
নতুন উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘যে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি সে বিষয়ে খুব ভালো করে জানতে হবে। সেটাতে কীভাবে এগোনো যায় সেই হোমওয়ার্ক করতে হবে।
‘স্বপ্নের সঙ্গে বাস্তবতার মিল থাকতে হবে। পরিবারের সঙ্গে থাকলে অনেক দূর এগোনো যায়।’
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারী দিবস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নারীর সাফল্যকে কখনও কখনও হাস্যকর হিসেবে উপস্থাপন করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
প্রতিটি মানুষ আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করলে সফলতা আসবেই বলে মনে করেন ট্রিম টেক্স বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শাহেদা পারভীন।
তিনি বলেন, ‘আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করেই এগিয়ে যেতে হবে। নারী এখন ঘর সামলাচ্ছে, বাইরেও সামলাচ্ছে। পাঁচ বছরে আমাদের জিডিপি যেভাবে বেড়েছে সেখানে নারীদের অবদান রয়েছে।
‘মেয়ে মানেই যোদ্ধা। উদ্যোক্তা মানেই তাকে যুদ্ধ করে সামনে এগোতে হবে। অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হবে।’
শাহেদা বলেন, ‘শুরুটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে করতে হবে। পারব না বলে কিছু নেই। আর চেষ্টাটাকে মূল্যায়ন করতে হবে।’
নারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি। উদাহরণ টেনে বলেন, ‘নারীদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ থাকা জরুরি। ঘর থেকেই এটি শুরু করতে হবে। ঘরের মানুষের সম্পৃক্ততা থাকলে অনেক দূর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।
ন্যায্য সম্মান পেলে নারীদের এগিয়ে যেতে সময় লাগে না বলেও মত ব্যক্ত করেন তিনি। বলেন, ‘পুরুষের সহযোগিতায় নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে। আবার তাদের অসহযোগিতাই নারীদের পিছিয়ে দিচ্ছে।’