সাত বছর ধরে দুই হাত বেঁধে রাখা সেই শিশু জান্নাতুল বৃষ্টির চিকিৎসায় তার পরিবারকে ৫০ হাজার টাকার চেক দিয়েছেন নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক।
মঙ্গলবার বিকেলে নিজ কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৃষ্টির মা-বার হাতে অনুদানের এই চেক তুলে দেন জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘বৃষ্টিকে শনিবার ময়মনসিংহ মেডিক্যালে নিয়ে চিকিৎসক দেখানো হবে। আরও উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন হলে সব ব্যয় জেলা প্রশাসন বহন করবে। তার চিকিৎসার তদারকি করবেন দুর্গাপুরের ইউএনও।’
এ সময় দুর্গাপুরের ইউএনও মোহাম্মদ রাজীব উল আহসান ও জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার দশাল গ্রামের রাজমিস্ত্রি শাহজাহান মিয়া ও গৃহিণী আয়েশা খাতুনের মেয়ে জান্নাতুল বৃষ্টি।
দুই বোনের মধ্যে সে বড়। ২০১৪ সালের ৬ জুন একজন ধাত্রীর মাধ্যমে তার জন্ম হয়। বৃষ্টির মা আয়েশা খাতুন জানান, ওই সময় তার নড়াচড়ায় কিছু অস্বাভাবিকতা দেখা গেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করানো হয়।
আয়েশা জানান, এক বছর যেতে না যেতেই বৃষ্টির অস্বাভাবিক আচরণ বাড়তে থাকে। মুক্ত অবস্থায় সে নিজেই নিজের মাথায় থাপড়াতে থাকে। হাত-পায়ে কামড়াতে থাকে। রাতে না ঘুমিয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করে। লোকজনকে মারতে আসে। জিনিসপত্র ভাঙচুর করে।
এসব কারণে নিরুপায়ে তাকে সারাক্ষণ ঘরের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয় বলে জানান বৃষ্টির মা-বাবা। সাত বছর ধরে এভাবেই চলছে তার জীবন।
বৃষ্টির বাবা শাহজাহান মিয়া জানান, তিনি রাজমিস্ত্রি। সামান্য রোজগারে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে মেয়ের চিকিৎসা করাতে পারেননি।
এ নিয়ে রোববার নিউজবাংলায় ‘মুক্তি মিলবে কি শিশু বৃষ্টির?’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।