বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এক দিনে শেয়ারের দর কমবে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ

  •    
  • ৮ মার্চ, ২০২২ ১৬:২০

পুঁজিবাজারে কোনো কোম্পানির শেয়ারের দর কেনা বা বিক্রির আদেশের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ১০ পয়সার হিসাব করা হয়। এর ফলে নতুন সিদ্ধান্তে ৫ টাকার নিচে থাকা কোম্পানির শেয়ারদর কমতে পারবে না। ৫ টাকা থেকে ৯ টাকা ৯০ পয়সা দরের শেয়ারের দর এক দিনে সর্বোচ্চ ১০ পয়সার বেশি কমতে পারবে না। ১০ টাকা থেকে ১৪ টাকা ৯০ পয়সা যেগুলোর দর, সেগুলো কমতে পারবে সর্বোচ্চ ২০ পয়সা। ১৫ টাকা থেকে ১৯ টাকা ৯০ পয়সার শেয়ারের দর কমতে পারবে সর্বোচ্চ ৩০ পয়সা। ২০ টাকা থেকে ২৪ টাকা ৯০ পয়সা পর্যন্ত শেয়ারের দর কমতে পারবে সর্বোচ্চ ৪০ পয়সা।

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর থেকে পুঁজিবাজারে টানা দরপতনের মধ্যে স্থিতিশীলতা তহবিল থেকে বড় বিনিয়োগের পাশাপাশি শেয়ারদর কমার সর্বোচ্চ সীমা কমিয়ে এনেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন থেকে কোনো কোম্পানির শেয়ারদর সর্বোচ্চ ২ শতাংশ কমতে পারবে, এতদিন যা ছিল ১০ শতাংশ।

তবে শেয়ারের দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা আগের মতোই ১০ শতাংশ রাখা হয়েছে।

মঙ্গলবার বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।

এই সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগের ন্যায় এটি দীর্ঘমেয়াদি হবে না। পরিস্থিতির উন্নতি হলে ২ শতাংশের সীমা তুলে নেয়া হবে।’

বিএসইসির এই কমিশনার বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দেয়া আমাদের মৌলিক ও প্রধান কাজ। এ জন্য আমরা নানাবিধ চেষ্টা করে থাকি।’

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের দিন থেকে পুঁজিবাজারে ধস নামে। আট কর্মদিবসে সোমবার পর্যন্ত সূচক পড়ে ৩৮২ পয়েন্ট বা ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

মঙ্গলবার লেনদেনের এক ঘণ্টা যেতে না যেতেই সূচক পড়ে যায় আরও ১৩৭ পয়েন্ট। তখন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক জেঁকে বসে।

এরপর বিএসইসি প্রথমে পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল থেকে ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের নির্দেশ দেয় প্রথমে। কিছুক্ষণ পর আসে দ্বিতীয় আদেশটি।

শেয়ারের দর সর্বোচ্চ ২ শতাংশ কমার সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিএসইসির আদেশ

এই আদেশের কারণে কোনো কোম্পানির শেয়ারদর যদি এক দিন ১০ শতাংশ বা আশপাশে বেড়ে দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে লেনদেন হয়, তাহলে সেই পরিমাণ দর কমতে কমপক্ষে পাঁচ কর্মদিবস লাগবে।

পুঁজিবাজারে কোনো কোম্পানির শেয়ারের দর কেনা বা বিক্রির আদেশের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ১০ পয়সার হিসাব করা হয়। এর ফলে নতুন সিদ্ধান্তে ৫ টাকার নিচে থাকা কোম্পানির শেয়ারদর কমতে পারবে না।

৫ টাকা থেকে ৯ টাকা ৯০ পয়সা দরের শেয়ারের দর এক দিনে সর্বোচ্চ ১০ পয়সার বেশি কমতে পারবে না। ১০ টাকা থেকে ১৪ টাকা ৯০ পয়সা যেগুলোর দর, সেগুলো কমতে পারবে সর্বোচ্চ ২০ পয়সা।

১৫ টাকা থেকে ১৯ টাকা ৯০ পয়সার শেয়ারের দর কমতে পারবে সর্বোচ্চ ৩০ পয়সা। ২০ টাকা থেকে ২৪ টাকা ৯০ পয়সা পর্যন্ত শেয়ারের দর কমতে পারবে সর্বোচ্চ ৪০ পয়সা।

এর আগে ২০২১ সালে সর্বোচ্চ পতনের ২ শতাংশ সীমা বেঁধে দিয়েছিল কমিশন। ওই বছরে প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়া কোম্পানিগুলোর উপর এই সীমা আরোপ করা হয়।

এরপরে ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল প্রথম দফায় ৬৬টি ও ৩ জুন দ্বিতীয় দফায় ৩০ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নেয় কমিশন। শুরুতে ব্যাপক দরপতন হলে ফ্লোর তুলে নেয়া কোম্পানিগুলোর শেয়ার এক দিনে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ কমতে পারবে বলে জানায় কমিশন। তবে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আগের মতোই ১০ শতাংশ সীমা বহাল রাখে। এরপরে ১৭ জুন সব সিকিউরিটিজের উপর স্বাভাবিক সার্কিট ব্রেকার আরোপ করে।

২০২০ সালে দেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলো পুঁজিবাজারে ধস নামে। শেয়ারবাজারে পতন ঠেকাতে ওই বছরের ১৯ মার্চ সে সময়ের কমিশন প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে করে দেয় বিএসইসি।

বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ জানান, সেকেন্ডারি মার্কেটে তারল্য প্রবাহ নিশ্চিত করতে স্থিতিশীলতা তহবিল থেকে ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের যে নির্দেশ দেয়া হয়, সেটির বাস্তবায়ন, অর্থাৎ শেয়ার কেনা শুরু হয়ে গেছে।

ব্যাংক ও আইসিবির বিনিয়োগ নিয়ে হতাশা

সংবাদ সম্মেলনে পুঁজিবাজারে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বিশেষ তহবিল থেকে বিনিয়োগে অনীহা নিয়েও কথা বলেন বিএসইসি কমিশনার। রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরশন অফ বাংলাদেশ-আইসিবির ভূমিকাও যথাযথ নয় বলে মনে করেন তিনি।

শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ব্যাংকগুলোর ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল ব্যবহারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতিবাচক। কিন্তু এখনো অনেক ব্যাংক ওই ফান্ড গঠন করেনি। এ ছাড়া কেউ কেউ ফান্ড গঠন করলেও তা ব্যবহার করেনি।’

২০২০ সালে দেশে করোনাভাইরাসের উপস্থিতির পর পুঁজিবাজারে ধস নামলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে বিশেষ তহবিল গঠনের অনুমতি দেয়। একেকটা ব্যাংককে ২০০ কোটি টাকা করে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হয়। ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের যে সীমা, সেটি থেকে এ তহবিলের চাঁদা বাইরে থাকবে বলে জানানো হয়।

এই হিসাবে ৬২টি ব্যাংকের ১২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের ‍সুযোগ তৈরি হয়। কিন্তু এর অর্ধেক তহবিলও গঠিত হয়নি। কারণ, সব ব্যাংক তহবিলে টাকা দেয়নি। আবার দিলেও ২০০ কোটি টাকা দেয়নি।

যে তহবিল গঠন হয়েছে, তারও একটি বড় অংশ অলস বসে আছে।

আইসিবি নিয়ে বিএসইসি কমিশনার বলেন, ‘শেয়ারবাজারে আইসিবির ভূমিকাটা যেমন হওয়া দরকার ছিল, তা কোম্পানিটির বর্তমান ম্যানেজমেন্ট উপলব্ধি করছেন। আশা করি এই বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানটি আগামীতে শেয়ারবাজারে সঠিক ভূমিকা রাখতে পারবে।’

স্থিতিশীল পুঁজিবাজারের জন্য ‘মার্কেট মেকার’ গুরুত্বপূর্ণ বলেও উল্লেখ করে শামসুদ্দিন আহমেদ আক্ষেপ প্রকাশ করেন। বলেন, ‘আমাদের দেশে মার্কেট মেকারের আইন আছে, কিন্তু মার্কেট মেকার নেই। যদি দেশে বড় বড় মার্কেট মেকার থাকত, তাহলে বর্তমানের এই পরিস্থিতি কাটানো যেত। এটি শেয়ারবাজারের জন্য খুবই কার্যকর। যা বিশ্বের সব দেশেই আছে।’

শেয়ার কিনে পরের দিনই বিক্রি কবে থেকে

বর্তমানে বি ও এ ক্যাটাগরির শেয়ার কিনলে তৃতীয় কর্মদিবসে বিক্রি করা যায়। জেড ক্যাটাগরির শেয়ার বেচতে হলে সময় লাগে আরও এক দিন বেশি। একে টি প্লাস থ্রি ও টি প্লাস ফোর বলা হয়।

বিএসইসি প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে টি প্লাস ওয়ান অর্থাৎ এক দিনেই শেয়ার বিক্রির উপযোগী হবে। তবে এটি কবে থেকে কার্যকর হবে, সেটি জানানো হয়নি।

শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শেয়ারবাজারে লেনদেনের গতি বাড়াতে ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে কমিশন টি প্লাস ওয়ান সেটেলমেন্ট চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে চালুর আগে শেয়ারবাজারে টি প্লাস ওয়ান সেটেলমেন্টের প্রকৃত অর্থে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে কি না, তা যাচাই করা হবে। কোনো ইতিবাচক ফলাফল ছাড়া চালু করতে চাই না।’

সংবাদ সম্মেলন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর