২০০৩ সালের ১৪ জুন চট্টগ্রাম নগরীর খুলশীর উত্তর আমবাগান রেলওয়ে কোয়ার্টারের বাসায় ঢুকে রেলওয়ে কর্মচারী শফিউদ্দিনকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করে আতঙ্ক ছড়াতে এলাকায় বোমা ফাটিয়ে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।
এ ঘটনার ১৮ বছর পর সাজা পেতে যাচ্ছেন শফিউদ্দিনের হত্যাকারী শিপন হাওলাদার ও নাইমুল ইসলাম ইমন।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে মঙ্গলবার রাত ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে শিপন ও নাইমুলের ফাঁসি কার্যকর হবে বলে নিশ্চিত করেছেন সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ।
শফিউদ্দিন ছিলেন রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী-১ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী।
তিনি স্থানীয় রেলওয়ে আমবাগান এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত ছিলেন তিনি।
এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও রেলওয়ের অবৈধ সম্পদ দখলের প্রতিবাদে সোচ্চার ছিলেন তিনি। তার প্রচেষ্টায় রেলওয়ের জায়গা থেকে চার দফায় অবৈধ বস্তি ও কলোনি উচ্ছেদ করে প্রশাসন। এসব ঘটনার জেরেই পরিকল্পনা অনুযায়ী তাকে হত্যা করা হয়।
ঘটনার পরপরই নিহতের স্ত্রী মাহমুদা বেগম খুলশী থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০০৪ সালের ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ২৩ জনের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে আসামি শিপন ও ইমনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। এ ছাড়া সাত আসামিকে যাবজ্জীবন এবং খালাস দেয়া হয় চারজনকে।
শিপন হাওলাদারের বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়ায় হলেও থাকতেন চট্টগ্রাম নগরের খুলশীর দক্ষিণ আমবাগানে। আর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের নাইমুল ইসলাম ইমন থাকতেন চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার ডেবারপাড় এলাকায়।
ফাঁসি কার্যকরের আগে মঙ্গলবার সকালে তাদের সঙ্গে পরিবার-স্বজনদের শেষ সাক্ষাতের দিন ছিল, কিন্তু কেউই তাদের সঙ্গে দেখা করতে আসেননি বলে জানান জেল সুপার।
মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা উচ্চ আদালতে আপিল করেছিলেন। ২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত তা খারিজ করে দেয়। সবশেষ চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করা হলে তাও খারিজ হয়ে যায়।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. আসাদুর রহমান বলেন, ‘দণ্ডিতদের মধ্যে একজনকে ২০২০ সালে, অন্যজনকে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।’