মাদ্রাসার কমিটি নিয়ে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায় সদর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ও সাবেক সদস্যের দ্বন্দ্বের জেরে এক ছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
উপজেলার তখলপুর এলাকায় সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটনা।
নিহত যুবকের নাম রাজু আহমেদ। ২২ বছরের রাজু স্থানীয় ভ্যানচালক আক্তার হোসেনের ছেলে। তিনি ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে অনার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন।
নিউজবাংলাকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর থানা পুলিশের এসআই লাল্টু বিশ্বাস।
নিহতের বাবা আক্তার শেখ জানান, সোমবার সন্ধ্যায় বাড়ির পাশের দোকানে বসে তিনি চা খাচ্ছিলেন। এ সময় দোকানে তিন থেকে চারজন লোক ঢুকে তাকে মারধর করে। হামলাকারীদের হাতে লাঠি, কুড়াল ও ধারালো দা ছিল।
সেখান থেকে কোনো মতে দৌড়ে বাড়িতে যান তিনি। হামলাকারীরাও তার পিছু তার বাড়িতে চলে আসে। এ সময় ঘর থেকে বের হন তার ছেলে রাজু। হামলাকারীদের হামলার কারণ জানতে চাইলে তারা রাজুর মাথায় কুড়াল দিয়ে কোপ দেয়।
পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা নেয়ার পথে গোয়ালন্দে রাজু মারা যায়।
নিহতের পরিবারের দাবি, তারা বাবা-ছেলে সরাসরি কোনো দল না করলেও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য মকবুল হোসেনের সমর্থক ছিলেন। এ কারণে সাবেক ইউপি সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কাজী আবদুর রউফের লোকজন হামলা করে রাজুকে হত্যা করেছে।
স্থানীয়রা জানায়, গতবছর ডিসেম্বরে ইউপি নির্বাচনে সদস্য প্রার্থী কাজী রউফকে পরাজিত করে মকবুল হোসেন নির্বাচিত হন। এরপর গ্রামের একটি মাদরাসায় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি পদে দুজনই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিয়ে গত শনিবার থেকে কয়েক দফায় দুপক্ষের মধ্যে মারামারিসহ বাড়িঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এরই জেরে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে তারা মনে করছেন।
তবে ছাত্র নিহতের ঘটনায় সাবেক ও বর্তমান ইউপি সদস্যরা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছেন।
সাবেক ইউপি সদস্য আবদুর রউফ শনিবার রাতে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হন। এ সময় বাম পা ও মাথায় আঘাত পান তিনি। বলেন, ‘ মকবুল হোসেনের লোকজন এ হামলা চালিয়েছে।’
তবে মকবুল হোসেন ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, ‘আব্দুর রউফের লোকজনের হামলা চালিয়ে রাজুকে হত্যা করেছে।’
এ ঘটনায় তখলপুর এলাকায় দায়িত্বরত এসআই লাল্টু বিশ্বাস বলেন, শনিবার হামলার ঘটনার পর থেকেই এ এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গতকালের ঘটনার সময় পুলিশ মধ্য পাড়ায় টহলে ছিল। এর দেড় কিলোমিটার দূরে হামলার ঘটনা ঘটে। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে রাজুসহ আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশ এখন রাজুর বাড়ি ঘিরে রেখেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মাগুরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।’