বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নিজের সঙ্গে ৩০ নারীকে এগিয়ে এনেছেন শিমু

  •    
  • ৮ মার্চ, ২০২২ ১০:২৬

শিমু বলেন, ‘আমি বারবার বিপদে পড়েছি, কিন্তু কখনও হাল ছাড়িনি। আমি জানি, আমার কর্মই আমাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমার শুরুটা অনেক কঠিন হলেও অনলাইন গ্রুপের মাধ্যমে আমি সফল হয়েছি। পরিশ্রমের তুলনায় অনেক বেশি লাভবান হয়েছি।’

ফেনীর সোনাগাজীর শামীমা আফরোজা শিমুর গল্পের শুরু ২০০৫ সালে। প্রবাসী স্বামী যখন হঠাৎ চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরলেন তখন শিমুই ধরেন সংসারের হাল।

নিজের সংসারের অভাব তো ঘুচিয়েছেনই, সেই সঙ্গে ৩০ জন নারীর কর্মসংস্থান হয়েছে শিমুর কারণে।

২০০৫ সালে একই উপজেলার কামরুল হাসান মিলনের সঙ্গে বিয়ে হয় শিমুর। বিয়ের কয় মাসের মাথায় মিলন সৌদি আরবে যে কোম্পানিতে কাজ করতেন সেটি দেউলিয়া হয়ে যাওয়ায় হঠাৎ দেশে ফিরে আসতে হয়।

সংসারের খরচ মেটাতে শিমু বাবার বাড়ি থেকে স্থানীয় ছেলে-মেয়েদের প্রাইভেট পড়ানো শুরু করেন। প্রাইভেট পড়িয়ে জমানো টাকা দিয়ে ২০০৫ সালের শেষ দিকে থান কাপড় কিনে হাতের কাজ করা শুরু করেন।

সোনাগাজী বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি প্রশিক্ষণে শিমু সেলাইয়ের কাজ শেখেন। নিজের বানানো নকশিকাঁথা, জামা স্থানীয়দের কাছেই বিক্রি করতেন।

একটু একটু করে টাকা জমিয়ে ২০০৮ সালের শুরুর দিকে সেলাই মেশিন কেনেন। ২০১৯-এর শেষ দিকে এক আত্মীয় শিমুকে অনলাইনে তার হাতের কাজের প্রচারের পরামর্শ দেন। এরপর বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে তিনি নিজের বানানো নকশিকাঁথা, থ্রি-পিস, শিশুদের পোশাকের ছবি তুলে পোস্ট করতে থাকেন।

এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি শিমুর। দেশের নানা জায়গা থেকে কাজের অর্ডার পাওয়া শুরু করেন। ব্যবসার পরিধি বাড়তে থাকায় স্থানীয় ৩০ জন নারীকে সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ দেন। তাদের কিনে দিয়েছেন ৯টি সেলাই মেশিন। তারা এখন শিমুর হয়ে কাজ করছেন।

উদ্যোক্তা শিমু তার কাজের স্বীকৃতিও পেয়েছেন। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও রোকেয়া দিবসে সরকারিভাবে দেশব্যাপী পরিচালিত ‘জয়িতার অন্বেষণে বাংলাদেশ’ কার্যক্রমে ফেনী জেলায় অর্থনৈতিকভাবে সফলতা অর্জনকারী নারীর সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। এর আগে পান সোনাগাজীর শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা।

শিমু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি বারবার বিপদে পড়েছি, কিন্তু কখনও হাল ছাড়িনি। আমি জানি, আমার কর্মই আমাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমার শুরুটা অনেক কঠিন হলেও অনলাইন গ্রুপের মাধ্যমে আমি সফল হয়েছি। পরিশ্রমের তুলনায় অনেক বেশি লাভবান হয়েছি।

‘আমি নিজে এখন আর সেলাইয়ের কাজ করি না। যে ৩০ জন নারীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি তারা বানায়, আমি বিক্রি করি। অন্য নারীদের বলব, নিজেকে গুটিয়ে না রেখে পারিবারিক কাজের পাশাপাশি অবসর সময় কাজে লাগান। আপনারাও সফল হবেন।’

জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান বলেন, ‘নারীদের এ ধরনের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। হাত গুটিয়ে বসে না থেকে কাজ করলে সাফল্য আসবে। যারা বাস্তবে কিছু করতে চায় তারা যদি পুঁজি সংকটে থাকে তাহলে আমরা তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসব।’

এ বিভাগের আরো খবর