বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বড় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করছেন না: বিএসইসি চেয়ারম্যান

  •    
  • ৭ মার্চ, ২০২২ ১৮:১৭

‘সবার প্রতি আমার অনুরোধ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সঙ্গে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের তেমন সম্পর্ক নেই। অযথা আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করবেন না।... গত কয়েক দিনে আমরা বিএসইসির পক্ষ থেকে বাজার মনিটর করে দেখেছি, বড় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করছেন না। ছোট বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন; আর সেই বিক্রির চাপেই বাজারে প্রভাব পড়েছে।’

পুঁজিবাজারে সাম্প্রতিক দরপতনে বড় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করছেন না জানিয়ে আতঙ্কে সেল অর্ডার না বসানোর পরামর্শ দিয়েছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান শিবলী-রুবাইয়াত-উল ইসলাম।

সোমবার ১৮২ পয়েন্ট সূচক পতনের পর নিউজবাংলাকে দেয়া একান্ত প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘গত কয়েক দিনে আমরা বিএসইসির পক্ষ থেকে বাজার মনিটর করে দেখেছি, বড় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করছেন না। ছোট বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন; আর সেই বিক্রির চাপেই বাজারে প্রভাব পড়েছে।’

রুশ হামলার দিন থেকে শুরু হয় ধস। সেদিন সূচক পড়ে ১০৯ পয়েন্ট। সারা বিশ্বেই সূচক পড়েছিল, তবে পরদিন ঘুরে দাঁড়ায় বেশির ভাগ পুঁজিবাজার। তবে উল্টো ছিল দেশের পুঁজিবাজার। হামলার পরের কর্মদিবস ২৭ ফেব্রুয়ারি পতন হয় আরও বেশি, সূচক পড়ে ১৬৩ পয়েন্ট। হামলার অষ্টম দিনে আরও বেশি পতনে বিনিয়োগকারীদের মনের ভয় আরও বড় হয়েছে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর কেবল আট কর্মদিবসে পুঁজিবাজারে প্রায় ৪০০ পয়েন্ট সূচক পতন হয়েছে। এর মধ্যে বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বড় পতন দেখলেন সোমবার। এদিক ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স থেকে হারিয়ে গেছে ১৮২ পয়েন্ট।

যে ৩৭৯ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে, তার মধ্যে দাম বেড়েছে কেবল ১০টির। এর মধ্যে আবার তিনটির দাম বেড়েছে ১ শতাংশের কম। দর ধরে রাখতে পেরেছে আটটি কোম্পানি, আর কমেছে ৩৬৪টির দর।

এক দিনে এত বেশি কোম্পানির শেয়ারের দরপতন সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যায়নি।

বর্তমান কমিশনের আমলে দ্বিতীয় দফায় পুঁজিবাজারে এমন ধস দেখা দিয়েছে। ২০২০ সালের মার্চে করোনা প্রাদুর্ভাবের পর এই ধরনের ধসের মধ্যে লেনদেন বন্ধ করে দেয়ার পর দায়িত্ব নেয় শিবলী রুবাইয়াতের নেতৃত্বে বিএসইসি।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর কেবল ৮ কর্মদিবসে পুঁজিবাজারে প্রায় ৪০০ পয়েন্ট সূচক পতন হয়েছে। এর মধ্যে বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বড় পতন দেখলেন সোমবার। এদিক ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স থেকে হারিয়ে গেছে ১৮২ পয়েন্ট।

মে থেকে টানা উত্থান চলে পরের বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত। এরপর জানুয়ারি থেকে মার্চের শেষ পর্যন্ত দর সংশোধনের মধ্যে এপ্রিলের শুরুতে ধস দেখা দেয় লকডাউন আতঙ্কে। যদিও বিএসইসি জানিয়েছিল, লকডাউনে পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ হবে না, তার পরও বিনিয়োগকারীরা হাতে থাকা শেয়ার কম দামে বিক্রি করে দেন।

তবে লকডাউনে লেনদেনে বাজারে দেখা দেয় ব্যাপক চাঙাভাব আর তখন এর আগে যে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করেছেন, তারা আফসোস করেন।

এবার ইউক্রেনে রুশ হামলার দিন থেকে শুরু হয় ধস। সেদিন সূচক পড়ে ১০৯ পয়েন্ট। সারা বিশ্বেই সূচক পড়েছিল, তবে পরদিন ঘুরে দাঁড়ায় বেশির ভাগ পুঁজিবাজার। তবে উল্টো ছিল দেশের পুঁজিবাজার। হামলার পরের কর্মদিবস ২৭ ফেব্রুয়ারি পতন হয় আরও বেশি, সূচক পড়ে ১৬৩ পয়েন্ট।

হামলার অষ্টম দিনে আরও বেশি পতনে বিনিয়োগকারীদের মনের ভয় আরও বড় হয়েছে।

বাজারে একটা সমস্যা হয়েছে, সেটা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নয়, আট-দশ দিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংক পুঁজিবাজার নিয়ে একটা গাইডলাইন দিয়েছে; সেই গাইডলাইন মানতে গিয়ে অনেক মার্চেন্ট ব্যাংক ও সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের বাজারে সাপোর্ট দেয়ার ক্ষমতা কমে গেছে: আহমেদ রশিদ লালী

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘সবার প্রতি আমার অনুরোধ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সঙ্গে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের তেমন সম্পর্ক নেই। অযথা আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করবেন না।’

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য ব্রোকারেজ হাউসের মালিকদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালীও একই কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি জোর দিয়ে বলছি, যুদ্ধের সঙ্গে আমাদের পুঁজিবাজারের কোনো যোগাযোগ নেই। অযথাই একশ্রেণির বিনিয়োগকারী আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন; আর সে কারণে বিক্রির চাপে বাজারে বড় পতন হচ্ছে।’

সোমবারের এই দরপতন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে

লালী মনে করেন, পুঁজিবাজারে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগসীমা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি যে নির্দেশনা দিয়েছে, সেটিরও প্রভাব থাকতে পারে এই পতনে।

তিনি বলেন, ‘বাজারে একটা সমস্যা হয়েছে, সেটা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নয়, আট-দশ দিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংক পুঁজিবাজার নিয়ে একটা গাইডলাইন দিয়েছে; সেই গাইডলাইন মানতে গিয়ে অনেক মার্চেন্ট ব্যাংক ও সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের বাজারে সাপোর্ট দেয়ার ক্ষমতা কমে গেছে।

‘বিএসইসির সঙ্গে কোনো ধরনের আলাপ না করেই এই নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দ্রুত কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিএসইসি বসে ওই লাইডলাইনের সংশোধনী আনা উচিত বলে আমি মনে করি।’

সোমবারের পতনে পুঁজিবাজার নেমে গেছে সাত মাসের আগের অবস্থানে। গত বছরের ২৯ জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন সূচক এখন পুঁজিবাজারে। সেদিন ডিএসইএক্সের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৪২৫ পয়েন্ট। তবে সে সময় বিনিয়োগকারীরা ছিলেন উৎফুল্ল। কারণ তখন বাজারে ছিল চাঙাভাব আর প্রায় প্রতিদিনই সূচক আগের অবস্থানকে ছাড়িয়ে ২০১০ সালের মহাধসের পর সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছে যায়।

এ বিভাগের আরো খবর