সাত বছর ধরে দুই হাত বেঁধে রাখা সেই শিশু জান্নাতুল বৃষ্টির চিকিৎসার উদ্যোগ নিয়েছে নেত্রকোণার দুর্গাপুরের উপজেলা প্রশাসন।
দুর্গাপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজীব উল আহসান সোমবার দুপুরে নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাজীব উল আহসান বলেন, ‘আমি বৃষ্টির বিষয়ে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। আগামী শনিবার মা-বাবাসহ তাকে সেখানে পাঠানো হবে।
দুই হাসপাতাল থেকেই বৃষ্টির জন্য বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। এর পরও যত ধরনের বাড়তি খরচ লাগবে, তা আমরা উপজেলা প্রশাসন থেকে বহন করব।
‘সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে দেখবেন এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। এরপর প্রাথমিক চিকিৎসা দেবেন। তারা প্রয়োজন মনে করলে বৃষ্টিকে ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালেও পাঠানো হবে।’
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসক ওয়াসিম এ ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করবেন বলে জানান তিনি।
ইউএনও আরও বলেন, ‘দুই হাসপাতাল থেকেই বৃষ্টির জন্য বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। এর পরও যত ধরনের বাড়তি খরচ লাগবে, তা আমরা উপজেলা প্রশাসন থেকে বহন করব।’
নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার দশাল গ্রামের রাজমিস্ত্রি শাহজাহান মিয়া ও গৃহিণী আয়েশা খাতুনের মেয়ে জান্নাতুল বৃষ্টি।
দুই বোনের মধ্যে সে বড়। ২০১৪ সালের ৬ জুন একজন ধাত্রীর মাধ্যমে তার জন্ম হয়। বৃষ্টির মা আয়েশা খাতুন জানান, ওই সময় তার নড়াচড়ায় কিছু অস্বাভাবিকতা দেখা গেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করানো হয়।
আয়েশা জানান, এক বছর যেতে না যেতেই বৃষ্টির অস্বাভাবিক আচরণ বাড়তে থাকে। মুক্ত অবস্থায় সে নিজেই নিজের মাথায় থাপড়াতে থাকে। হাত-পায়ে কামড়াতে থাকে। রাতে না ঘুমিয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করে। লোকজনকে মারতে আসে। জিনিসপত্র ভাঙচুর করে।
এসব কারণে নিরুপায়ে তাকে সারাক্ষণ ঘরের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয় বলে জানান বৃষ্টির মা-বাবা। সাত বছর ধরে এভাবেই চলছে তার জীবন।
বৃষ্টির বাবা শাহজাহান মিয়া জানান, তিনি রাজমিস্ত্রি। সামান্য রোজগারে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে মেয়ের চিকিৎসা করাতে পারেননি।
এ নিয়ে রোববার নিউজবাংলায় ‘মুক্তি মিলবে কি শিশু বৃষ্টির?’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।