আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে দেশের বাজারেও ভোজ্যতেলের দাম ১৫ দিন পর পর সমন্বয়ের দাবি তুলেছেন ব্যবসায়ীরা।
এফবিসিসিআই আয়োজিত ‘তেলের বাজারের উদ্ভূত পরিস্থিতি’ নিয়ে সোমবার মতবিনিময় সভায় এ দাবি জানান।
এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে রাজধানীর মতিঝিলে সংগঠনের কার্যালয়ে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় তীর ব্র্যান্ডের সরবরাহকারী সিটি গ্রুপের পরিচালক (অর্থ) বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘লিটারে ১৬৮ টাকায় যে তেল আমরা বিক্রি করছি, সেটির আন্তর্জাতিক বাজার ছিল টনপ্রতি এক হাজার ৩০০ ডলার। এখন যে তেল আমরা বাজারে ছাড়তে যাচ্ছি, অর্থাৎ লিটার ১২ টাকা দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছি, তার আন্তর্জাতিক দর এখন এক হাজার ৪২০ ডলার। এটি ১ হাজার ৮০০ ডলারে উঠে গেছে।’
আগামী এক থেকে দেড় মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কোথায় গিয়ে ঠেকতে পারে সে সম্পর্কে কেউ জানে না বলে জানান তিনি।
বলেন, ‘অথচ সরকার আমাদের বাড়তি দামের প্রস্তাব এখনো গ্রহণ করেনি। এই দামের অসহিষ্ণু পরিস্থিতিতেও আমরা সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। সরকারকে প্রাইস সমন্বয়ের বিষয়ে ভাবতে হবে।’
এর আগে লিটারে ১২ টাকা তেলের দাম বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি তেলের দামের উত্তাপ সহ্য করতে পরামর্শ দেন ব্যবসায়ীদের। সেই সঙ্গে তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
পরে ব্যবসায়ীরা বাজারে ভোজ্যেতলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। এমনকি তারা বাজারে খোলা তেল বিক্রিও বন্ধ করে দেয়।
সভায় বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘ভোজ্যতেল নিয়ে প্রায়ই কথা হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিচ্ছে, সরকার তা রিফিউজড করছে। আবার ব্যবসায়ীরা বাড়তি দামে প্রস্তাব দিচ্ছে, সেটিও কতটা গ্রহণযোগ্য তা বিবেচনার দাবি রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ব্যবসার ধর্ম হচ্ছে লাভ করা, লাভ না থাকলে কেউ ব্যবসা করবে না। যেহেতু আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি এখন খুবই ঘোলাটে, সকাল-বিকেল দাম পরিবর্তন হচ্ছে; এই পরিস্থিতিতে একবার দাম নির্ধারণ করে দিয়ে তা দীর্ঘদিন ধরে রাখার কোনো সুযোগ নেই। বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতির সঙ্গে দেশের বাজার অন্তত ১৫ দিন পর পর সমন্বয় করা প্রয়োজন।’
বাজারদর এভাবে নিয়মিত সমন্বয় করা না হলে তেল নিয়ে আরও বড় সংকট তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করেন তিনি।
ভোজ্যতেল পাইকারি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা তো লস দিয়ে বিক্রি করবে না। বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রি হওয়ার কথা নয়। অথচ বাজারে অভিযানের নামে ব্যবসায়ীদের অপদস্ত করা হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে।
‘একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতির সঙ্গে সংগতি রেখে দেশের বাজারেও ১৫ দিন অন্তর অন্তর দাম সমন্বয় করতে হবে।’
সভায় ভোজ্যতেল আমদানিকারক ও পরিশোধনকারী কোম্পানির প্রতিনিধি, পাইকারি ব্যবসায়ী, এফবিসিসিআই নেতারা অংশ নেন।