বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সন্তানের সামনেই ‘ধর্ষণের শিকার’ সেই নারী কোথায়

  •    
  • ৭ মার্চ, ২০২২ ১৪:৩৮

ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলতে তার বাড়িতে গেলে পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশীরা বলছেন দুই দিন থেকে বাড়িতে নেই তারা। তাদের শঙ্কা, তারা মামলা করতে চাওয়ায় তাদেরকে গুম করে রাখা হতে পারে।

ঠাকুরগাঁওয়ের সদরে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর ভুক্তভোগী নারীসহ পরিবারের কাউকেই বাড়িতে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

স্থানীয়রা বলছেন, অভিযুক্তদের পেছনে প্রভাবশালীদের হাত আছে। তাদের নামে মামলা করতে চাওয়ায় এরপর থেকে পরিবারটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

তবে পুলিশ বলছে ওই পরিবারটি পঞ্চগড়ের বোদার কোনো এক এলাকায় আছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

সদর উপজেলার রুহিয়া ইউনিয়নের মধুপুর গুদাম পাড়া এলাকায় হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারীকে তার তিন বছরের শিশুসন্তানের সামনে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সন্তানসহ রুহিয়ার ঢোলার হাটে ধর্মীয় উৎসবে যান ওই নারী। একই এলাকার তান্ত্রিক প্রকাশ ঝোল গুপ্তধনের লোভ দেখিয়ে কৌশলে রাত ১১টার দিকে সন্তানসহ ওই গৃহবধূকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে রুহিয়ার মিশন রেলগেট কোয়ার্টারে নিয়ে যান।

সেখানে আটকে রেখে তাকে ধর্ষণ করেন তান্ত্রিক। পরে তার সহযোগী রুহিয়া মিশন রেল গেটম্যান শামীম, এনামুল, মেজর, উজ্জ্বল দাস তাকে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণ করেন।

বাড়িতে গিয়ে ঘটনাটি পরিবারকে জানালে ভুক্তভোগীর স্বামী স্থানীয় ইউপি সদস্য ইউছুফ আলীকে বিষয়টি জানান।

স্থানীয় পান দোকানদার তসলিম উদ্দীন বলেন, ‘শুক্রবার সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়। এ ঘটনায় টাকা দিয়ে দফারফাও করেন ইউপি সদস্য ইউসুফ, স্থানীয় হোটেল ম্যানেজার বরুণসহ আরও কয়েকজন।’

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, ‘সমাজে আমাদেরও মা-বোন আছে। এতটা অনিরাপদ সমাজে যদি আমাদের থাকতে হয়, এর চেয়ে ভয়ংকর আর কিছু হতে পারে না। এ অভিযোগে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা না হলে আমরা স্থানীয়রা রাস্তায় নামব।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘মামলা করতে চাওয়ার পর পরিবারটিকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অভিযুক্তদের পেছনে প্রভাবশালীদের হাত আছে। তাই হয়তো গুম করে ফেলেছে। আমরা খুব আতঙ্কে আছি।’

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সবার মোবাইলে ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে শামিম ফোন ধরলেও অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যস্ততা দেখিয়ে লাইন কেটে দেন।

রুহিয়া রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টারের মোবাইলে ফোন দেয়া হলে প্রথমে তা ধরেননি। পরে আবার ফোন দিলে নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গেটকিপার জানিয়েছেন, অভিযোগ ওঠার পর শামিমকে অপসারণ করেছে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে ভুক্তভোগী পরিবারটিকে টাকা দিয়ে মীমাংসার বিষয়টি স্বীকার করে হোটেল ম্যানেজার বরুণ বলেন, ‘পরবর্তীতে টাকা ফেরত দিয়েছে তারা। বলেছে মামলা করবে। এর বেশি কিছু জানি না।’

ইউপি সদস্য ইউসুফ আলী প্রথমে অস্বীকার করলেও একপর্যায়ে ঘটনাটি স্বীকার করে বলেন, ‘বিষয়টি আমি রুহিয়া থানার পুলিশ কর্মকর্তা সিদ্দীককে জানিয়েছিলাম।’ তবে টাকার বিনিময়ে রফাদফার বিষয়ে অস্বীকার করেন তিনি।

ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলতে রোববার তার বাড়িতে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশীরা বলছেন দুই দিন থেকে বাড়িতে নেই তারা। তাদের শঙ্কা, তারা মামলা করতে চাওয়ায় তাদেরকে গুম করে রাখা হতে পারে।

এ বিষয়ে সংরক্ষিত আসনের সাবেক ইউপি সদস্য বিনা রাণী বলেন, ‘এই গৃহবধূ আর্থিকভাবে গরিব। শুনেছি একই এলাকার সাধক ঝোল তাকে বিভিন্ন লোভ দেখিয়ে মিশন রেলগেটে নিয়ে যান। পরে গেটম্যানসহ কয়েকজন তাকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনার অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করার দাবি জানাই।’

রুহিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চিত্ত রঞ্জন রায় সোমবার বলেন, ‘বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, পরিবারটি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার কোনো এক এলাকায় আছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’

এ বিভাগের আরো খবর