পটুয়াখালীতে সরকারি অফিসে ঢুকে দুজন প্রকৌশলীকে মারধর করে সরকারি কাজে বাধা ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে ঠিকাদারের নামে মামলা হয়েছে।
দুমকী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এসজিইডি) প্রকৌশলী নাজিম উদ্দিন রোববার রাত পৌনে ১১টার দিকে মেসার্স পল্লি ট্রেডার্সের মালিক গোলাম সরোয়ার বাদলের নামে মামলা করেন।
দুমকী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সালাম নিউজবাংলাকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রকৌশলী নাজিম বলেন, ‘বাদল রোববার দুপুর ১২টার দিকে আমার অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সালামের সঙ্গে পুরোনো একটি বিল নিয়ে বাগবিতণ্ডা করেন ও চড়থাপ্পড় মারেন। বাদল আমার সঙ্গে বিল নিয়ে কথা বলতে চাইলে আমি নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারের সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয় করার পরামর্শ দেই।
‘কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিনি টেবিলে রাখা গ্লাসভর্তি পানি আমার মুখে ছুড়ে মারেন। চেয়ার ছুড়ে আমার গালে থাপ্পড় মারেন। এরপর আমাদের তার সঙ্গে থাকা পিস্তলের ভয়ভীতি দেখান। অন্য লোকজন এসে তাকে সেখান থেকে নিয়ে যায়।’
উপসহকারী প্রকৌশলী সালাম বলেন, ‘২০১৬ সালে দুমকী উপজেলার পাঙ্গাশিয়ায় ব্রিজ নির্মাণ করেন বাদল। ব্রিজে নানা ত্রুটি থাকায় কাজ শেষে বিল নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। রোববার আমার কাছে এসে তিনি শতভাগ বিল দাবি করেন।
‘আমি তাকে ওই প্রকল্প যৌথ মেজারমেন্ট করে বাকি বিল পরিশোধের কথা বলি। তিনি এসে চাইলেই টাকা দিতে পারি না বলে জানাই। এতে বাদল রেগে গিয়ে আমাকে চড়থাপ্পড় মারেন। উপজেলা প্রকৌশলীর কক্ষে গিয়েও তিনি একই কাজ করেন।’
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বাদল বলেন, ‘পুরোনো একটি বিল নিয়ে এলজিইডি টালবাহানা শুরু করে। বিল সংক্রান্ত বিষয়ে দুমকী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন অর-রশিদ মধ্যস্ততা করেন। বিল দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে সালাম ১০ লাখ টাকা দাবি করলে ধারদেনা করে রোববার তাকে ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেই।
‘সালাম টাকা হাতে নিয়ে বাকি টাকা ছাড়া বিল দেবেন না বলে জানান। তখন আমি তার গায়ে হাত তুলতে বাধ্য হই কিন্তু উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কিছু হয়নি।’
ঘুষ নেয়ার অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছেন সালাম।
উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি আমার অফিসে ছিলাম। এলজিইডির লোকজন এসে আমাকে মারধরের ঘটনা জানায়। আমি গিয়ে বাদলকে পাইনি। ঘটনাটি উপজেলা পরিষদের নয়, এটা জেলা অফিসের। তবুও এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাই।’
নির্বাহী প্রকৌশলী শাহাবুদ্দিন জানান, বিষয়টি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ওসি বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’