‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের ২৮ নাবিক ও ক্রু ইউক্রেন থেকে নিরাপদে রোমানিয়ায় পৌঁছেছেন। তারা মঙ্গলবার দেশে ফিরতে পারেন। তবে নিহত হাদিসুরের মরদেহ ইউক্রেনেই রয়ে গেছে। সেখানে যুদ্ধ-পরিস্থিতির উন্নতি হলে মরদেহ দেশে আনার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বুখারেস্টে বাংলাদেশ দূতাবাস ও ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন জানান, ইউক্রেন থেকে ২৮ বাংলাদেশি নাবিক-ক্রু মলদোভা হয়ে রোমানিয়ার বুখারেস্টে পৌঁছেছেন। আর নিহত হাদিসুরের মরদেহ বিশেষ ব্যবস্থায় ইউক্রেনে সংরক্ষণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তা দেশে আনার ব্যবস্থা করা হবে।
এদিকে রোমানিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ দাউদ আলী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের ২৮ নাবিক-ক্রুকে রাজধানী বুখারেস্টে একটি হোটেলে রাখা হবে। তাদের দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
গত বুধবার ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে নোঙর করে রাখা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শিকার হয়। গোলার আঘাতে জাহাজের তৃতীয় প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান নিহত হন।
ইউক্রেনে আটক পাঁচজন খেলা দেখতে রাশিয়ায় গিয়েছিলেন
ইউক্রেনে পাঁচ বাংলাদেশি জিম্মি হিসেবে আটক আছেন- গণমাধ্যমের এমন সংবাদ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নজরে এসেছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা যতটুকু জেনেছি তারা খেলা দেখতে রাশিয়ায় গিয়েছিলেন। এরপর অবৈধভাবে রাশিয়া থেকে ইউক্রেনে প্রবেশ করেন তারা। এরপর সে দেশের বর্ডার সিকিউরিটির হাতে ধরা পড়ে ডিটেনশনে আছেন।
‘আটক পাঁচ বাংলাদেশি নাগরিকের কাছে কোনো বৈধ ভিসা বা পাসপোর্ট না থাকায় তাদের ডিটেনশন সেন্টারে আটকে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ ও পোলিশ সরকার- উভয় পক্ষ থেকেই আটককৃত বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
এর আগে খবর ছড়ায় যে, বিভিন্ন দেশের বেশ কিছু নাগরিককে জিম্মি করে রাখা হয়েছে ইউক্রেনে এবং তাদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, ইউক্রেন ও বেলারুশ সীমান্ত থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরে জুরাভিসি নামক এক জায়গায় নারী ও শিশুসহ বিভিন্ন দেশের ১২০ নাগরিক একটি সাবেক ডিটেনশন সেন্টারে (যা বর্তমানে ক্যাম্প) আটক অবস্থায় রয়েছেন।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা যায়, ডিটেনশন সেন্টারে থাকা রিয়াদ মালিক নামে এক বাংলাদেশি বলেছেন, ‘এখানে আমাদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে এবং তারা আমাদের ফোন ছিনিয়ে নিয়েছে। আমি কোনোমতে এই ফোনটি লুকিয়ে রেখেছিলাম এবং এর মাধ্যমেই আমি আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে পারছি। তারা আমাদের ফোন নিয়ে গেছে যেন আমরা গণমাধ্যমের কাউকে কিছু জানাতে না পারি। তারা আমাদের বন্দি করে রেখেছে এবং জিম্মি হিসেবে ব্যবহার করছে। আমাদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমাদের পর্যাপ্ত খাবারও দিচ্ছে না।’