রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের পর তিন দিন আটকে রাখার ঘটনায় গ্রেপ্তার দম্পতিকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরার আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার উপপরিদর্শক (নিরস্ত্র) মোহাম্মদ আলী সৈকত আসামিদের আদালতে হাজির করে সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন।
শুনানি শেষে বিচারক দুজনকে এক দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।
রিমান্ডের আদেশ পাওয়া দুজন হলেন গৃহকর্তা এজাজ সাকলায়েন ও তার স্ত্রী তানজীমা হাসেম।
এর আগে শনিবার গুরুতর আহত অবস্থায় শিশু লিজা আক্তারকে উদ্ধার করা হয়। পরে ভাটারা থানায় ওই দম্পতিকে আসামি করে মামলা করেন পুলিশের উপপরিদর্শক হাসান মাসুদ।
রোববার ভোরে তাদের আটকের পর গ্রেপ্তার দেখানো হয় বলে জানান ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুর রহমান।
তিনি বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে এসআই হাসান মাসুদ বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ব্লক-বি-এর ৪ নম্বর সড়কের ১৯৩ নম্বর বাসায় যান। বাসার বাথরুম থেকে ১৩ বছর বয়সী শিশু লিজাকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করেন।
সাজেদুর রহমান জানান, শিশু লিজার বাড়ি ময়মনসিংহের রহমতপুর গ্রামে। গত ৭ নভেম্বর মাসিক ৪ হাজার টাকা বেতনে লিজা ওই বাসায় কাজে যোগ দেয়। এর পর থেকে সামান্য বিষয়েও ওই দম্পতি শিশুটিকে শারীরিক নির্যাতন করা শুরু করেন। ৩ ফেব্রুয়ারি স্বামী-স্ত্রী দুজনে লিজাকে চুরির অপবাদ দিয়ে মারধর করেন। এ সময় তানজীমা হাসেম চুলায় খুন্তি গরম করে লিজার হাত, পা, মুখ, পিঠ, বুকসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দিয়ে জখম করেন।
ওসি জানান, লিজার মাথার বাম দিকের চুল টেনে তুলে ফেলা হয়। তানজীমার স্বামী এজাজ শিশুটিকে রড দিয়ে পেটান। দিনভর অত্যাচারে শিশু লিজা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসা না দিয়ে বাথরুমে আটকে রাখা হয়। তিন দিন পানি খেয়ে ছিল লিজা।
তিনি জানান, লিজা বাথরুমের জানালা দিয়ে চিৎকার করে উদ্ধারের সাহায্য চাইলে পাশের ভবনের বাসিন্দারা ৯৯৯-এ ফোন করে এই ঘটনা জানান। ভাটারা থানার পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে লিজাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করে।
ওসি বলেন, ‘লিজাকে ভয়াবহ নির্যাতন করা হয়েছে।’