বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিএসএফের গুলিতে নিহত লিটনের বাড়িতে শোক

  •    
  • ৬ মার্চ, ২০২২ ১৬:৫৩

প্রাগপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান জানান, লিটন ভারত থেকে মালামাল নিয়ে বিলগাথুয়া সীমান্ত দিয়ে রাতে ফিরছিলেন। এশার নামাজের কিছু আগে বিএসএফ সদস্যরা তাকে গুলি করে হত্যার পর মরদেহ নিয়ে যায়।

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের (বিএসএফ) গুলিতে নিহত যুবক লিটন হোসেনের বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের বিলগাথুয়া মাঠপাড়ায় চলছে শোকের মাতম।

সন্তানকে হারিয়ে কান্নার বাঁধ ভেঙেছে লিটনের মা-বাবার। তাদের সঙ্গে কান্নায় যোগ দিয়েছেন প্রতিবেশীরা। এদিকে স্বামীকে হারিয়ে শোকে বাকরুদ্ধ লিটনের স্ত্রী ও দুই ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার এশার নামাজের কিছু আগে ভারত থেকে মালামাল নিয়ে বিলগাথুয়া সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরছিলেন লিটন। এ সময় বিএসএফ সদস্যরা গুলি করে হত্যার পর তার মরদেহ নিয়ে যায়।

ভারতের হোগলবাড়িয়া থানা পুলিশের বরাতে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাবীদ হাসান বলেন, ‘মরদেহ হোগলবাড়িয়া হাসপাতাল মর্গে রাখা আছে।’

এদিকে রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বিলগাথুয়া মাঠপাড়ায় নিহতের বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকার মানুষের ভিড়। কয়েক রুমের পাকা বাড়ির সামনে একটি টিনের ছাউনি দেয়া আধাপাকা ঘর লিটনদের। সামনে ইট ও খোয়া গাদা করে রাখা আছে। সেখানেই বিলাপ করছিলেন তার পরিবারের সদস্যরা। তাদের চারদিকে ঘিরে আছে প্রতিবেশী ও স্বজনরা।

লিটনের স্ত্রী শারমিন আক্তার শিল্পী কান্না করতে করতে বলেন, ‘শনিবার আসরের আজানের পর ভাত খেয়েছে, জার হাতে নিয়ে বের হয় লিটন। বলে গেল নদীর ধারে মরিচের চারায় পানি দিতে যাচ্ছে। এরপর কোথায় কীভাবে গেল কিছুই বলতে পারব না।’

এ সময় লিটনের দুই ছেলে ১২ বছরের স্বাধীন ও আট বছরের সানীকে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলেন তাদের দাদা আকবর বিশ্বাস। আকবর বলেন, ‘ইন্টারনেটে দেখলাম আমার সর্বনাশ হয়ে গেছে। ছেলে মাঠে কাজ করত। দুটি গরু আছে। গরু দুটো সঙ্গে করে নিয়ে কোথায় যেন রেখে এসেছে।’

নিহত লিটনের বাড়িতে শোক জানাতে ভিড় করেন প্রতিবেশীরাও। ছবি: নিউজবাংলা

লিটনের মা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নদীর ধারে মরিচের ক্ষেতে পানি দিতে গেল আমার ছেলে। সন্ধ্যা হওয়ার পর খোঁজ করে দেখি ছেলে নেই।’

লিটন কার সঙ্গে কী করে বাড়িতে তার কিছুই বলে না বলে জানান তার মা।

এ ঘটনায় প্রাগপুর ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড সদস্য আবুল কালাম বলেন, ‘শুনেছি লিটন চোরাকারবারির মাল আনতে ভারতে গিয়েছিলেন। তার আরও এক ভাই ও ভাইয়ের ছেলে এ কাজের সঙ্গে জড়িত বলে এলাকার মানুষের ধারণা।’

প্রাগপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান জানান, লিটন ভারত থেকে মালামাল নিয়ে বিলগাথুয়া সীমান্ত দিয়ে রাতে ফিরছিলেন। এশার নামাজের কিছু আগে বিএসএফ সদস্যরা তাকে গুলি করে হত্যার পর মরদেহ নিয়ে যায়।

এখন লিটনের মরদেহ দেশে আনতে বিএসএফের চিঠির অপেক্ষা করছে বিজিবি।

বিজিবির প্রাগপুর কোম্পানি কমান্ডার আমজাদ হোসেন বলেন, ‘বিএসএফ এ ব্যাপারে আমাদের কিছুই জানায়নি। তাদের চিঠির অপেক্ষা করছি। চিঠি পেলেই পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মরদেহ আনার চেষ্টা করা হবে।

‘নিহত বাংলাদেশি ভালো বা খারাপ যে কাজেই যুক্ত থাক, তার মরদেহ আনার ব্যাপারে আমরা চেষ্টা চালাব।’

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবীদ হাসান বলেন, ‘ভারতের হোগলবাড়িয়া থানা থেকে ফোন করে তাকে নিশ্চিত করা হয়েছে মরদেহটি সেখানে আছে। হোয়াটসঅ্যাপে তারা মরদেহের ছবিও পাঠায়। পরে নিহতের বাড়ি বিলগাথুয়া মাঠপাড়ায় গিয়ে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে ছবির মিল পাওয়া যায়।

‘ভারতের পুলিশ বলেছে, ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ তারা বিজিবির কাছে হস্তান্তর করবে।’

এ বিভাগের আরো খবর