সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের ঠাকুর পাড়ার নুরুল ইসলাম। শারিরীক প্রতিবন্ধকতায় তার জীবন আগে থেকেই কঠিন।
তবে শারীরিক প্রতিবন্ধী নুরুল ইসলামের জীবন আরও কঠিন হয়ে যায় যখন গত ২৭ ফেব্রুয়ারি। সেদিন রাতে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে লাগা আগুনে পুড়ে যায় তার থাকার একমাত্র ঘরসহ সবকিছু। এরপর থেকেই পরিবার নিয়ে অন্যের বাড়িতে থাকছিলেন তিনি।
তবে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘দ্য বার্ড সেফটি হাউস’ এর উদ্যোগে নুরুল ও তার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন কানাডা প্রবাসী জাকির হোসেন ও তার বন্ধুরা।
প্রতিবন্ধী নুরুল ইসলামের কাছে রোববার সকাল ১০টার দিকে নতুন ঘরটি হস্তান্তর করেন বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনিসুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নিউজবাংলা ও যমুনা টিভির সিনিয়র রিপোর্টার গোলাম মোস্তফা রুবেল, দ্য বার্ড সেফটি হাউসের চেয়ারম্যান ও স্বেচ্ছাসেবী সমাজকর্মী মামুন বিশ্বাস, সাংবাদিক পারভেজ আলি, স্বেচ্ছাসেবক সুজন ও সাদেক আলী।
নতুন ঘরে নুরুল ও তার স্ত্রী । ছবি:নিউজবাংলা
নতুন রঙিন ঘর পাওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এমনিতেই অনেক কষ্ট করে সংসার চালাতাম। তার ওপর আগুনে ঘরসহ সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি যে আমি নতুন রঙিন ঘর পাব। তাও আবার এত তাড়াতাড়ি। শুধু ঘর নয়, ছাগলসহ আরও অনেক কিছু পেয়েছি। আমি খুব খুশি। যতদিন বেঁচে থাকব, জাকির ভাই ও তার বন্ধুদের জন্য দোয়া করব।’
দ্য বার্ড সেফটি হাউসের চেয়ারম্যান ও সমাজকর্মী মামুন বিশ্বাস জানান, নুরুলের ঘর পুড়ে যাওয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে তার নজরে আসে। বিষয়টি তিনি তার কানাডা প্রবাসী ভাই জাকিরকেও জানান।
মামুন বিশ্বাস বলেন, ‘জাকির ভাই ও তার বন্ধুরা মিলে নুরুলের বাড়ির জন্য ৮১ হাজার ৪০০ টাকা পাঠান। সেই টাকা দিয়েই খুব দ্রুত ঘরের কাজ শেষ করে আজ বুঝিয়ে দিলাম।’
ঘরের পাশাপাশি নুরুলের পরিবারকে দেয়া হয়েছে তিনটি ছাগল, লেপ-তোশক, থাকার চৌকি, পোশাক ও কাঁচাবাজারসহ সাড়ে ৭ হাজার টাকা।
মামুন আরও বলেন, ‘আমরা সবাই যদি যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসি, তাহলে আমাদের সমাজে কোনো মানুষ অবহেলিত থাকবে না। আমাদের সবাইকে সমাজের কল্যাণে এগিয়ে আসা দরকার।’
বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনিসুর রহমান বলেন, ‘সরকারের পাশাপাশি এ রকম সামাজিক সংগঠন আছে বলেই সমাজের অসহায় মানুষগুলো উপকৃত হচ্ছে। আজ এই অসহায় পরিবারকে যে সহায়তা দেয়া হয়েছে তা দেখে আমি অনেক খুশি। আমরা সরকারিভাবে কিছু সহায়তা দেব। সমাজের ধনীরা যদি এভাবে অসহায় মানুষের পাশে থাকে তাহলে সমাজের চিত্র পরিবর্তন হবে আশা করি।’