বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মশার রাজত্ব শুরু, সিটি করপোরেশন ‘জানে’ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে

  •    
  • ৬ মার্চ, ২০২২ ১৬:১২

মশা বাড়তে শুরু করলেও সেভাবে আলোচনা তৈরি না হওয়ায় সিটি করপোরেশনের নিয়মিত কার্যক্রমের বাইরে তেমন তৎপরতা নেই। বলা যায়, মশক নিধনের ওষুধ নিয়ে বসে আছে তারা। নগরীর তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা দুটি সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এও দাবি করেছেন যে এখন পর্যন্ত মশার সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আছে।

অফিস শেষে রাতের বেলায় মাইক্রোবাসে চেপে বাসায় ফিরছেন কয়েকজন। দরজা খুলতেই চালক দিলেন তাগাদা। বললেন, ‘দ্রুত ওঠেন, নইলে মশার কামড় খেতে হবে।’

সাবধানবাণী শুনে দ্রুতই চাপলেন কয়েকজন সহকর্মী। তাতে লাভ বিশেষ হলো না। গাড়ি চলতে শুরু করতেই শুরু হলো মশার কামড়।

শীত শেষ না হতেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মশার উপদ্রব বাড়তে দেখা যাচ্ছে। বলা যায়, মশার রাজত্ব শুরুর ইঙ্গিত মিলছে। এখনও সেভাবে আলোচনা তৈরি না হওয়ায় সিটি করপোরশনের নিয়মিত কার্যক্রমের বাইরে তেমন তৎপরতা নেই। বলা যায়, মশক নিধনের ওষুধ নিয়ে বসে আছে তারা।

মশা নিধনের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের হাতে। রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনই জানিয়েছে, মশা নিধনে নিয়মিত কার্যক্রম চলছে। তবে সাঁড়াশি কোনো অভিযান নেই। সে অভিযানের জন্য তাদের যথেষ্ট পরিমাণে কীটনাশক মজুত আছে।

নগরী তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা দুটি সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এও দাবি করেছেন যে এখন পর্যন্ত মশার সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আছে।

বিকেল থেকেই উপদ্রব

রাজধানীর খিলগাঁও নতুনবাগ সোসাইটি এলাকায় বাস বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবী মিম আক্তারের। এলাকার পাশেই ডোবা-নালা। সেটি মশার এক প্রজননক্ষেত্র। ফলে আশপাশের বাসাবাড়ি ও লোকসমাগমে বিকেল থেকেই শুরু হয় মশার উপদ্রব।

নিউজবাংলাকে মিম বলেন, ‘প্রায় এক মাস ধরে মশার সমস্যা দেখা দিয়েছে। রাতে বাড়ে উপদ্রব। বাসার পাশে ডোবা-নালা পরিষ্কার না করার কারণে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।’

রামপুরা এলাকার বাসিন্দা মৌসুমী আক্তার বলেন, ‘জানালা খুলতে গেলে মশা হুড়হুড় করে রুমে ঢুকে যায়।’

সেলাই মেশিনে কাজ করার সময় ইলেকট্রিক ব্যাট দিয়ে মশা মারছেন এক তরুণ। ছবি: নিউজবাংলা

একই অবস্থা হাতিরঝিল এলাকাতেও। সেখানে ঘুরতে যাওয়া মানুষের নাকেমুখে বাড়ি খায় উড়তে থাকা এই পতঙ্গ।

পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার শিংতলা এলাকায় থাকেন অর্ণব দেবনাথ। তিনি বলেন, ‘তিন-চার দিন হুট করে মশার উপদ্রব বেড়েছে। সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয় যন্ত্রণা।’

সন্ধ্যা নামতেই মোহাম্মদপুর বসিলা এলাকায় মশার উপদ্রব বেড়ে যায়। এখানকার বাসিন্দা অপূর্ব রায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই এলাকায় ওভাবে কীটনাশক ছিটাতে দেখা যায় না। যেখানে সেখানে ময়লা পড়ে থাকে। সিটি করপোরেশন এই এলাকায় উদাসীন ভাব দেখায়।’

‘পর্যাপ্ত কীটনাশক আছে, সমস্যা নেই’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপপ্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সারওয়ার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কীটনাশকের যা মজুত আছে তা দিয়ে সাত-আট মাস ভালোভাবে চলে যাবে। এটা শেষ হওয়ার আগেই আবার মজুত করা হবে।’

হঠাৎ মশার উপদ্রব বাড়ার কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পানি কমে গিয়েছে। তাই পানির ঘনত্ব বেড়ে নোংরা হয়েছে বেশি। কিউলেক্স মশা নোংরা পানিতে জন্মে। তাই এই সময় থেকে কিউলেক্স মশা বাড়ে।’

মশার উপদ্রব শুরু হয়ে গেলেও এই কর্মকর্তা মনে করেন, গতবারের তুলনায় মশা এবার সহনশীল পর্যায়ে এবং অনেক কম।

তিনি বলেন, ‘কচুরিপানার যেখানে থাকে সেখানে কিউলেক্স মশা জন্মায়। আমাদের লেকগুলোয় দেখবেন কচুরিপানা একদমই নেই। কিছু লেকে অল্প পরিমাণে আছে। আমরা এবার জোর দিয়েছিলাম লেক পরিষ্কারে।’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন প্রতিদিন মশা নিধন কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মশা নির্মূল সম্ভব না। আমরা চেষ্টা করছি মশাকে সহনীয় পর্যায়ে রাখতে।

‘উত্তর সিটি করপোরশনে নালা, ডোবা, লেক, খাল, বিল বেশি। এ কারণে উত্তর সিটি করপোরেশনে মশা বেশি হয়। এলাকা যদি পরিষ্কার থাকে, তবে মশা তুলনামূলক কমে যাবে। আমরা সেই চেষ্টাই করছি।’

‘বিচ্ছিন্নভাবে কোথাও কোথাও বাড়ছে, জরুরি ব্যবস্থা নিচ্ছি’

দক্ষিণ সিটি করপোরেশনও মনে করে মশা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফজলে শামসুল কবির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার জানামতে এ মৌসুমে কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে ছিল, এখনও আছে। তার পরও যেসব এলাকা সমস্যাসংশ্লিষ্ট, সেখানকার কর্মকর্তা ও সুপারভাইজারকে বলছি জরুরি ব্যবস্থা নিতে।

‘বিচ্ছিন্নভাবে দু-এক এলাকায় একটু বাড়তে পারে, সেটা আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

মশা নিধনে কী চেষ্টা চলছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা সকালে লার্ভিসাইট করি। বিকেলে অ্যাডাল্টিসাইট করি। এ ছাড়া মশা যেসব জায়গায় জন্মায়; খাল, বিল, ডোবা, নালা, জলাশয় এসব স্থান নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে।

‘পাশাপাশি বায়োলজিক্যাল কন্ট্রোলের জন্য জলাশয় পরিষ্কার করে মাছ, ব্যাঙ ছাড়ছি, যাতে মশার লার্ভা খেয়ে ফেলে।’

ঢাকা উত্তরের কর্মকর্তার মতো দক্ষিণের এই কর্মকর্তাও বলেন, ‘পুরো ২০২২ সালের দুই ধরনের কীটনাশকই আমাদের মজুত আছে। কীটনাশকের কোনো সমস্যা নেই।’

এ বিভাগের আরো খবর