ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের রেশ এসে পড়েছে দেশের রাজনীতির অঙ্গনেও। রুশ হামলার নিন্দায় জাতিসংঘে আনা প্রস্তাবে বাংলাদেশের ভোট না দেয়ার ঘটনাকে ঘিরে সরব ক্ষমতাসীন ও বিরোধীপক্ষ।
বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো এ ঘটনাকে গণতন্ত্র ও মানবিক মূল্যবোধের নীতিমালা পরিপন্থি বলে দাবি করছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীনরা বলছে, শান্তি স্থাপনে কোনো পক্ষভুক্ত হতে চায় না বাংলাদেশ।
গত শুক্রবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার চলমান সামরিক অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের নিন্দা প্রস্তাবে বাংলাদেশের ভোট না দেয়া সংবিধান ঘোষিত গণতন্ত্র ও মানবিক মূল্যবোধের নীতিমালা পরিপন্থি।’
জাতিসংঘের আনা সেই প্রস্তাবে কেনো বাংলাদেশ ভোট দেয়নি তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা চান বাংলাদেশ বিবাদে জড়াক। সে জন্যই এ ধরনের কথা বলছেন। বাংলাদেশ কোনো বিবাদে জড়াতে চায় না।’
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বৃহস্পতিবার একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। হামলা বন্ধ করে ইউক্রেন থেকে রুশ সেনাদের সরিয়ে নিতে ওই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে সাধারণ পরিষদের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৪১টি। তবে বাংলাদেশ ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিল।
ইউএন নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবে ১৯৩ সদস্য দেশের মধ্যে ১৪১টি দেশ পক্ষে ভোট দেয়। ভারত, চীন, বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ ৩৫টি দেশ ভোট দেয়নি।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, “আমরা পৃথিবীতে শান্তি বিরাজ করুক এটা আমরা চাই। পৃথিবীতে যুদ্ধ বিগ্রহ চাই না। বাংলাদেশ যে কোনো অশান্তির বিপক্ষে।
“আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়।’ এ কারণেই জাতিসংঘে বাংলাদেশ ভোটদানে বিরত ছিল, ভারতও বিরত ছিল, পাকিস্তানও বিরত ছিল। আরও অনেক দেশ বিরত ছিল।’’
‘মির্জা ফখরুল ইসলাম সাহেব বাংলাদেশ কেন বিরত ছিল সেটি নিয়ে অনেক কথা বলেছেন। তিনি কিন্তু সব কিছুর ব্যাখ্যা দেন, ভারত পাকিস্তান কেন বিরত ছিল এ ব্যাখ্যাটাও যদি তিনি দেন খুব ভালো হয়। সবচেয়ে বড় কথা আমরা কোনো পক্ষভুক্ত হতে চাই না। শান্তি স্থাপনে আমরা কোনো পক্ষভুক্ত হতে চাই না, এটিই আমাদের অবস্থান।’