বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের দ্বিতীয় শীর্ষ রপ্তানিকারক হলেও তুলনামূলক কম দামের পোশাকই রপ্তানি করে বাংলাদেশ। এতে পণ্যের পরিমাণ অনুপাতে আয় আসছে না।
এ অবস্থার উত্তরণে তৈরি পোশাক ও বস্ত্র শিল্পমালিকদের বিনিয়োগে বৈচিত্র্য আনা এবং কৃত্রিম ফাইবার (তন্তু বা সুতা) তৈরি উচ্চমূল্যের পোশাক রপ্তানির দিকে নজর দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন।
এফবিসিসিআই কার্যালয়ে শনিবার আরএমজি, নিটওয়্যার, সোয়েটারবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বেশির ভাগ উদ্যোক্তা সুতিনির্ভর পোশাকের কারখানা এবং স্পিনিংয়ে বিনিয়োগে আগ্রহী। এখন বিশ্ববাজারে কৃত্রিম ফাইবারের পোশাকের চাহিদা বাড়ছে। এসব পোশাকের দামও বেশি। তাই রপ্তানি আয় বাড়াতে তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তাদের ম্যান মেড ফাইবার খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
‘পোশাক উৎপাদনে ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে কম দামে গ্যাস-বিদ্যুতের সুবিধা পেয়ে আসছেন। এখন ধীরে ধীরে এ সুবিধা কমে যাচ্ছে। তুলনামূলক সস্তা শ্রমের সুবিধাও এখন আর নেই। অন্যদিকে এ শিল্পের কাঁচামালের দাম বাড়ছেই। তাই এ শিল্পে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে এখন উচ্চমূল্যের পোশাক রপ্তানিতে মনোযোগ দিতে হবে।’
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘রপ্তানিমুখী শিল্পের বাইরে থাকা কারখানাগুলোকেও নিরাপদ করতে এফবিসিসিআইতে সেফটি কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে। দেশের সব শিল্প-কারখানাকে নিরাপদ করতে বিডার সঙ্গে একযোগে কাজ করছে সেফটি কাউন্সিল।’
স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ও পোশাক রপ্তানিকারদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘বিশ্ববাজারে কোন ধরনের পোশাকের চাহিদা বাড়ছে, বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের কোন কোন খাতে বিনিয়োগ সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে, সেসব বিষয়ে একটি গবেষণা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। রপ্তানিকারকরা নিজেরা প্রতিযোগিতা করে অনেক সময় পণ্যের দাম কমিয়ে দিচ্ছেন। এই প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে।’
পোশাকশিল্পের নানা সমস্যা সমাধানে স্ট্যান্ডিং কমিটিতে ব্যাংক ও আর্থিক খাত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, অর্থ মন্ত্রণালয়, শ্রম মন্ত্রণালয়ভিত্তিক উপকমিটি করার প্রস্তাব দেন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
বৈঠকে সদস্যরা বলেন, তৈরি পোশাক খাতে কাস্টম ও বন্ড কমিশনারেটের হয়রানি এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা। বিভিন্ন কাঁচামাল আমদানিতে এইচএস কোডজনিত জটিলতার কারণেও ব্যবসায়ীরা বাধার মুখে পড়ছেন। বর্জ্য পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করে ব্যবহারের ক্ষেত্রেও আইনের সংশোধন দরকার।
এ সময় এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক ও স্থলবন্দরবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর-ইন চার্জ বিজয় কুমার কেজরিওয়াল পোশাক খাতের স্থলবন্দরকেন্দ্রিক যেকোনো সমস্যা সমাধানে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক হারুন অর রশীদ, মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ-আল-মাহমুদ মাহিনসহ অনেকে।