ইউক্রেনে আটকে পড়া জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র ২৮ নাবিক ও ক্রু ইতোমধ্যে রোমানিয়ায় পৌঁছেছেন বলে জানিয়েছেন পরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এম আবদুল মোমেন।
তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনে আটকে পড়া বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র ২৮ নাবিক ও ক্রু ইতোমধ্যে রোমানিয়ায় পৌঁছেছেন। আশা করা হচ্ছে দ্রুতই তারা দেশে ফিরবেন।’
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সিলেট রত্ন ফাউন্ডেশনের সাবেক চেয়ারম্যান সি এম তোফায়েল সামী স্মরণে এক সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকায় রাশিয়া দূতাবাস তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছে যে ইউক্রেনের সেনারা পাঁচ বাংলাদেশিকে জিম্মি করেছে। প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের পাশাপাশি এ বিষয়ে আমরা আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছি। ভিডিওটি পাওয়ার পর এ বিষয়ে আমরা রাশিয়ার কাছে জানতে চেয়েছি।’
পরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘একটি তথ্য প্রকাশ হয়েছে যে ইউক্রেনে বাংলাদেশি যারা অবস্থান করছেন তাদের প্রতি বিরূপ আচরণ করা হচ্ছে। আমরা সে তথ্য শোনার পরই সেখানে অফিসার পাঠিয়েছি। তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’
ঢাকায় রাশিয়ার দূতাবাস তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে ভিডিও প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, জিম্মি ওই বাংলাদেশিরা তাদের উদ্ধারের জন্য আকুতি জানাচ্ছেন।
জার্মানিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগও বলেছে, ইউক্রেনের কিভারতিসি শহরের একটি অভিবাসী শিবিরে আটকে আছেন পাঁচ বাংলাদেশিসহ শতাধিক বিদেশি।
এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেনে নিহত বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ ও জাহাজের ২৮ নাবিক-ক্রুর বিষয়ে পোল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লার সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি আমাদের জানিয়েছেন, মরদেহ বহনের জন্য বিশেষায়িত ফ্রিজিং ভ্যানের প্রয়োজন হয়। ইউক্রেনে এখন এই ভ্যানের সংকট রয়েছে। হাদিসুরের মরদেহ ওখানেই একটি হিমঘরে সংরক্ষিত আছে। পরিবহনের ব্যবস্থা করতে পারলেই মরদেহ রোমানিয়ায় নেয়া হবে।’
ইউক্রেনে আটকেপড়া বাংলাদেশিদের দেশে আনতে সহায়তার জন্য ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কন্টিনিউয়াসলি ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। তারা আমাদের সহযোগিতা করছে।’
ড. মোমেন বলেন, আলোচনার মাধ্যমে রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় বাংলাদেশ।
স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল মোমেন বলেন, ‘তোফায়েল সামীর মতো মানুষ সচরাচর দেখা যায় না। তিনি দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তিনি জীবনজুড়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। যেকোনো মানুষের মঙ্গলে কাজ করে মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেছেন।
‘তোফায়েল সামীর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ চৌধুরী। বক্তব্য দেন জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুল মজিদ চৌধুরী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা শফি সামি।