কুয়াকাটা সৈকতজুড়ে আবারও মৃত জেলিফিসের ছড়াছড়ি। গত দুইদিন ধরে চরগঙ্গামতি পয়েন্টে এসব জেলিফিশকে ভেসে আসতে দেখেছেন স্থানীয়রা।
পরে সৈকতের বালুতে আটকে মারা গেছে শত শত জেলিফিশ। কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টের তুলনায় চরগঙ্গামতি পয়েন্টে পর্যটক কম থাকায় এটি কারো মাথাব্যাথার কারণ হচ্ছে না। তবে এগুলো এভাবে পড়ে থাকলে পরিবেশ দূষিত হবার আশঙ্কা করছেন অনেকে।
বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে স্থানীয় জেলেদেরও। কারণ তারা ঠিকভাবে সাগরে জাল ফেলতে পারছেন না। এসব পয়েন্টে জাল ফেললেই জীবিত জেলিফিশ আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে।
মৃত জেলিফিশগুলোর কোনোটা দেখতে চাঁদের মতো আবার কোনটা দেখতে অক্টোপাসের মতো। সৈকত থেকে এগুলোকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন পর্যটকরা।
এর আগেও পটুয়াখালীর কয়েকটি চরে জেলিফিশের মৃত্যুর মহামারি শুরু হয়েছিল। সে সময় স্থানীয়রা জানিয়েছিলেন, অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় এবার বালিতে আটকে জেলিফিশের মৃত্যু অনেকাংশেই বেশি।
সে সময় কুয়াকাটাসংলগ্ন চরবিজয়, জাহাজমারা আর সোনারচর সৈকতে মৃত অবস্থায় অসংখ্য জেলিফিশ দেখা গিয়েছিল। জেলে ও মৎস্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন, ঢেউয়ের তোড়ে ভেসে এসেই সৈকতের বালুতে আটকা পড়ে মরছে জেলিফিশগুলো।
মৎস্য অধিদপ্তরের সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের বরিশাল বিভাগীয় উপপরিচালক মো. কামরুল ইসলাম বলেছিলেন, “নামে ‘ফিশ’ থাকলেও, মাছের মতো মেরুদণ্ড নেই জেলিফিশের। তাই এরা স্রোতের বিপরীতে চলতে পারে না। এ জন্য ঢেউয়ের তোড়ে সৈকতে চলে এলে এরা অনেক সময় ফিরে যেতে পারে না। বালুর সঙ্গে এর শরীর আটকে যায় এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যায়।”
বছরভেদে জেলিফিশ মৃত্যু কম-বেশি হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গভীর সাগরে লবণাক্ততা বেড়ে গেলে জেলিফিশরা সাধারণত কম লবণাক্ত এলাকায় ছুটে যায়। গভীর সমুদ্র থেকে লবণাক্ততা কম থাকায় এরা অনেক সময় উপকূলের দিকে ছুটে আসে। পরে ঢেউয়ের তোড়ে সৈকতের বালুতে আটকে এদের মৃত্যু ঘটে।’
হঠাৎ জেলিফিশের মৃত্যু বাড়ার বিষয়ে কামরুল ইসলাম জানান, শীত মৌসুমে সাগরে মাছ কম ধরা পড়ায় জেলেরা গভীর সাগরের তুলনায় উপকূলবর্তী এলাকায় বেশি জাল ফেলেন। তাদের জালেও জেলিফিশ ধরা পড়ে এবং জালের প্যাঁচেই অধিকাংশ মারা যায়। পরে জেলেরা সৈকতে জাল তুলে মাছগুলো পাইকারদের কাছে বিক্রি করলেও, জালে আটক জেলিফিশগুলো তারা সৈকতেই ফেলে দেয়।