চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে একটি মাদ্রাসা থেকে এক শিশুর গলা কাটা দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উপজেলার চরণদ্বীপ ইউনিয়নের আল্লামা শাহ আছিয়র রহমান হেফজখানা ও এতিমখানা থেকে শনিবার বেলা ১১টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল করিম।
নিহত শিশুর নাম ইফতেখার মালেকুল মাশফি। তিনি একই ইউনিয়নের ফকিরাখালী এলাকার আব্দুল মালেকের ছেলে।
ওসি আব্দুল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মাদ্রাসার দ্বিতীয় তলায় ওই শিশুর গলা কাটা দেহ পাওয়া গেছে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে সকালে সবক দেয়ার পর থেকে ওই শিশু নিখোঁজ ছিল।’
নিহত মাশফির বড় ভাই ইমতিয়াজ মালেকুল মাজেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘৫ মাস ধরে আশফির ওই মাদ্রাসায় পড়ে। সকালে জানানো হয়, আমার ভাই নিখোঁজ। ওকে এনে দেন। ভাইকে ছাড়া বাঁচব না আমি।’
মাদ্রাসায় শিশুদের নির্যাতন করা হতো অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘মাদ্রাসার হুজুরের পিটুনি খেয়ে ৫ ছাত্র কিছুদিন আগে শহরে পালিয়ে গিয়েছিল। রাতে মাদ্রাসায় যাওয়া নিষেধ, তবুও একদিন রাতে আমি উঁকি দিয়ে দেখি, একটা ছেলেকে কুকুরের মতো মারছে হুজুর। আমি হুজুরকে অনুরোধ করছি, আমার ভাইকে মারবেন না, আমার ভাইকে আমিই শাসন করব।’
মাদ্রাসা পরিচালক সৈয়দ শহিদুল্লাহ ফারুকী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকালে সবক দেয়ার পর খাবারও নাকি খেয়েছে ওই শিশু। পরে তাকে আর পাওয়া যাচ্ছিল না। ওর বাসায়ও খবর দেয়া হয়েছিল। পরে খোঁজাখুঁজির সময় মাদ্রাসার দ্বিতীয় তলায় পাওয়া গেছে। মাদ্রাসা মূলত নিচতলায়, ওপরের ওই রুমটা জরুরি হলে ব্যবহার করা হয়।’
হুজুরের বিরুদ্ধে পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হেফজ বিভাগে হুজুর তো দুজন আছে, আবাসিক আছে একজন। এখন ঠিক কার বিরুদ্ধে অভিযোগ তা তো জানি না। প্রশাসন তদন্ত করতেছে, কারো সংশ্লিষ্টতা পেলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।’
১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আল্লামা শাহ আছিয়র রহমান মাজার। এই মাজার চত্বরে ২০০৮ সালে হয় আল্লামা শাহ আছিয়র রহমান হেফজখানা ও এতিমখানা। ২০১৭ সালে একই চত্বরে হয় আল্লামা শাহ আছিয়র রহমান একাডেমি।