রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) তাপসী রাবেয়া হলের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের পর কক্ষ থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই হলেরই ছয় ছাত্রীর বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা থেকে দিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের পর ভোর ৪টার দিকে তাকে বের দেয়া হয়।
ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। অভিযুক্তরা হলেন সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মেফতাহুল জান্নাত মনিকা, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস সূচনা নাট্যকলার মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আসমা বিনতি, চারুকলার শিক্ষার্থী স্মৃতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মনিশা ও প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাম্মী আক্তার প্রেমা।
হল সূত্রে জানা যায়, প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার তাপসী রাবেয়া হলের ‘খ’ ব্লকের চার তলায় নিয়মিত সভা হয়। এ সভায় প্রতিটি কক্ষের সদস্যরা সমস্যা ও ফ্লোরে থাকার নিয়ম বলে আলোচনা করেন।
বৃহস্পতিবার রাতের সভায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অসুস্থ থাকায় কক্ষে চলে যান। পরে সেখানে তার রুমমেট তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এক পর্যায়ে কয়েকজন তাকে মারধর করে কক্ষ থেকে বের করে দেন৷
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ‘শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলাম। রাত দেড়টার দিকে রুমমেট সূচনাকে লাইট অফ করতে বলায় তিনি রেগে গিয়ে ফ্লোরের সবাইকে নিয়ে আসেন৷ পরে কয়েকজন মিলে গালিগালাজ করেন আমাকে। ঘটনাটি ফোনে রেকর্ড করছি বুঝতে পেরে মারধর করে ফোন কেড়ে নেন মনিকা নামের এক শিক্ষার্থী।
‘এরপর তারা জোর করে আমার ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে ফোন আনলক করে ব্যক্তিগত তথ্য ঘাঁটাঘাঁটি করেন। তিন ঘণ্টা পর হল সুপার ফোনটি ফেরত দেন৷ পরে ভোর চারটার দিকে আর হলে থাকতে দেবে না বলে হল থেকে বের হয়ে যেতে বলেন তারা। তখন হল সুপার আমাকে আয়াদের রুমে রেখে আসেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগীর রুমমেট জান্নাতুল ফেরদৌস সূচনা বলেন, ‘এটা নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’
অভিযুক্ত মেফতাহুল জান্নাত মনিকা বলেন, ‘তার রুমমেটের কিছু অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কয়েকজন সিনিয়র তাকে নিয়ে বসি। এক পর্যায়ে তিনি অসুস্থ বোধ করলে তার রুমমেট সূচনা তাকে রুমে নিয়ে যান। এরপর রাত ১টার দিকে সূচনা আমার কাছে এসে বলেন ফারজানা তাকে গালিগালাজ করেছেন।
‘এজন্য আমরা কয়েকজন ওদের রুমে যাই। সেখানে তিনি আমাদের সাথেও বাগবিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে তিনি আমাকে ধাক্কা দেযন। পরে ম্যামকে জানালে তিনি এসে তাকে সঙ্গে নিয়ে যান। তাকে হল থেকে বের করে দেয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ফেরদৌসী মহল বলেন, ‘আমি বর্তমানে রাজশাহীর বাইরে আছি। তবে হলের ঘটনার বিষয়ে শুনেছি। শনিবার ফিরবো। তারপর দুই পক্ষকে ডেকে এ বিষয়ের সমাধান করব।’
ছাত্র উপদেষ্টা বলেন, ‘হল থেকে শিক্ষার্থীকে বের করে দেয়ার অভিযোগ পেয়েছি। হলের প্রাধ্যক্ষ আসলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বসে এ বিষয়ে সমাধান করব।’