বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘সিস্টেমের টাকা এসিল্যান্ডও পায়’

  •    
  • ৪ মার্চ, ২০২২ ২০:৫১

তহশিলদার আলমগীর বলেন, দৌড়াদৌড়ি যখন করতেন না, আপনি আমারে না জিগাইয়া একজনকে জিগান কত টাকা জমা দেই। আপনি ওত করেই দিবেন...। আমরা জমা দিলে একটা সিস্টেমে হইয়া যায় যুগ যুগ ধইরা। এই সিস্টেমের জন্য কেউ ১০০, কেউ ৫০, কেউ ২০০ করে ৬/৭ জনে পায়, এসিল্যান্ডও পায়।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) ও তার সহকারীর বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযুক্তরা হলেন তহশিলদার আলমগীর মিঞা চৌধুরী ও তার সহকারী একেএম মনির হোসেন।

সম্প্রতি আলমগীরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ওই ভিডিওতে সেবা নিতে আসা দুই ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের দৌড়াদৌড়ি করা সম্ভব না। আপনার ওপর ভরসা করে...’

এ সময় তহশিলদার আলমগীর বলেন, ‘দৌড়াদৌড়ি যখন করতেন না, আপনি আমারে না জিগাইয়া একজনকে জিগান কত টাকা জমা দেই। আপনি ওত করেই দিবেন...। আমরা জমা দিলে একটা সিস্টেমে হইয়া যায় যুগ যুগ ধইরা। এই সিস্টেমের জন্য কেউ ১০০, কেউ ৫০, কেউ ২০০ করে ৬/৭ জনে পায়, এসিল্যান্ডও পায়।’

এসিল্যান্ডকে নিয়ে ওই দুই ব্যক্তি কথা বলতে চাইলে আলমগীর ‘বাদ দেন’ বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। এ সময় একজন হয়রানিমুক্ত সেবা চান বললে এ ভূমি কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকার সব জাগায় আইন করছে স্টাইলই এইডা।’

‘আমি যখন আপনার কাগজটা লমু, তখন কইব আপনার লাভটা কী?’ বলে কাগজ তুলে দিলে নিজের লাভ কী সেটা তিনি জানতে চান একাধিকবার।

আলমগীর আরও বলেন, ‘প্রত্যেকে মনে করে আমার লাভ আছে। লাভ আছে, লাভ যে কিছু নাই, তা কিন্তু না।’ এই বলে টেবিলের উপর থাকা টাকা দেখিয়ে নিজের লাভের হিসেব দিতে থাকেন তিনি।

একপর্যায়ে ওই ব্যক্তিদের একজন হাতে টাকা নিয়ে আলমগীরের কাছে জানতে চান, তাকে কত টাকা দিতে হবে।

এদিকে এ ঘটনায় আলমগীর মিঞা ও মনির হোসেনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভলাকূট ইউনিয়নের ভলাকুট গ্রামের শামীম আহম্মেদ।

অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, জমির খাজনা বাবদ ১০ টাকার রশিদের জন্য তাকে দিতে হয় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা, আর সাধারণ নামজারির জন্য ১১৭০ টাকার সরকারি ফির পরিবর্তে দিতে হয় ৭/৮ হাজার টাকা। এছাড়া জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল তৈরি কথাও লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

তার মতো একই অভিযোগ এ ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা বেশিরভাগ মানুষের। তাদের দাবি, ঘুষের অর্থ না দিলে মেলে না সেবা, চলে টালবাহানা।

আবু তাহের মিয়া নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমি তিনটি দলিলের জায়গা একসঙ্গে করতে গিয়েছিলাম। আমার কাছে ৯ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছিল। এত টাকা দেখে আমি আর খারিজ করিনি।’

আরেক ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমার দুটি জায়গা খারিজ করতে যাই। প্রথম দিকে ওনি (আলমগীর) আমার কাছ থেকে ২ হাজার নিয়েছে। পরে ১৫ হাজার টাকা দাবি করায় আজও খারিজ করিনি।’

ভিডিওর বিষয়ে জানতে চাইলে তহশিলদার আলমগীর অস্বীকার করে বলেন, ‘অসম্ভব, ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে সেটি ইডিট করা হয়েছে। ধরনের কোনো ভিডিও নেই।’

পরে ভিডিওটি দেখালে তিনি জানান ভিডিওর ব্যক্তিটি তিনি। তবে দাবি করেন, ভিডিওতে তার কথা কাটছাঁট করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নাসিরনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. মেহেদি হাসান খাঁন শাওন নিউজবাংলাকে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর